বিশেষ ট্রেন থেকে ম্যাপ, প্রস্তুতি তুঙ্গে প্রশাসনেরও

শহরের ছোট-বড় ক্লাব, স্কুল-কলেজের সঙ্গে সরস্বতী পুজোর তোড়জোড় চলছে প্রশাসনিক মহলেও। মানুষের ঢল সামলাতে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন। পুজো উপলক্ষে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে শিশুরা যাতে হারিয়ে না যায়, তার জন্য বিশেষ পরিচয়পত্রেরও ব্যবস্থা করছে তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:১০
Share:

আলোয় সেজেছে কালনার রয়্যাল ক্লাবের মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।

শহরের ছোট-বড় ক্লাব, স্কুল-কলেজের সঙ্গে সরস্বতী পুজোর তোড়জোড় চলছে প্রশাসনিক মহলেও। মানুষের ঢল সামলাতে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন। পুজো উপলক্ষে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে শিশুরা যাতে হারিয়ে না যায়, তার জন্য বিশেষ পরিচয়পত্রেরও ব্যবস্থা করছে তারা।

Advertisement

শুক্রবার শহরের পুরশ্রী মঞ্চে পুলিশের তরফে পুজোর গাইড ম্যাপ এবং শিশুদের পরিচয় পত্র উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশান্ত চৌধুরী, কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার, সিআই রাকেশ মিশ্র, ওসি দীপঙ্কর সরকার, কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু প্রমুখ। এসডিপিও বলেন, “বাইরে থেকে যাঁরা শহরে পুজো দেখতে আসবেন তাঁদের সহায়ক হবে গাইড ম্যাপটি। আর স্কুল মারফত শিশুদের পরিচয় পত্রের কার্ড পৌঁছে যাবে বাড়ি বাড়ি। অভিভাবকরা ঠাকুর দেখতে যাওয়ার আগে কার্ডটিতে যেন ছেলেমেয়েদের নাম, ঠিকানা লিখে শিশুদের পকেটে রেখে দেন।” ইন্দ্রজিৎবাবুর দাবি, এই পরিচয়পত্রের সাহায্যে ভিড়ে কোনও শিশু হারিয়ে গেলে সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে তাকে। বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবু জানান, রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ সরস্বতী পুজো উপলক্ষে শহরে আসেন। তাঁদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

ছোটদের পছন্দের কথা মাথায় রেখে সেজেছে একাধিক মণ্ডপও। বিশেষত, আলোর বৈচিত্র্য চোখে পড়ার মতো। চকবাজার থেকে ১০৮ শিবমন্দির যাওয়ার পথে চোখে পড়বে রাস্তার দু’ধারে বলাকা ক্লাবের আলোর প্রদর্শনী। লম্বা জিরাফদের মাথা নাড়ানো থেকে দোলনায় মজে থাকা শিশু, আলোর মাধ্যমে সবই তুলে ধরেছে স্পুটনিক ৭০। আলোর খেলা দেখা যাবে টেন স্টার ক্লাবেও। শিশুদের জন্য জঙ্গলের নানা জীবজন্তুর ছবি আলোয় সাজিয়েছে তারা। শিশুদের কথা মাথায় রেখে মণ্ডপ সাজিয়েছে শিবাজি নগর শতরূপা সঙ্ঘও। পুকুর পাড়ে পেঁচা, ময়ূর, পায়রা, হাঁস, প্রজাপতি থেকে বাহারি নৌকা সবই সাজিয়েছে তারা। ক্লাবের সদস্য জগন্নাথ মণ্ডলের দাবি, শিশুরা এ মণ্ডপে এলে মনের মতো জিনিস পাবেন। নিউ প্রান্তিক ক্লাবের আবার থিমই শিশুরা। গোলাকার মণ্ডপে মাটি এবং ১৩ জন জীবন্ত মডেলের মাধ্যমে তারা তুলে ধরছেন কীভাবে লেখাপড়ার চাপে শিশুদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রতিভা হারিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া শিশুদের মন জয় করতে উদ্যোক্তরা মণ্ডপে রেখেছেন ছোটা ভীম-সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র। শ্যামগঞ্জ কালীতলার দেবী সঙ্ঘের মণ্ডপ তৈরি করেছে এলাকার স্কুল পড়ুয়ারা। থিম শিল্পীর সরস্বতী। ছোট-বড় বিভিন্ন পেনসিল, তুলি, ক্যানভাস দিয়ে মণ্ডপ গড়েছে তারা।

Advertisement

শহরের মধ্যে যেন একটুকরো গ্রাম উঠে এসেছে কালনার রয়্যাল ক্লাবের মণ্ডপে। গ্রামের বধূর সন্ধ্যা প্রদীপ হাতে নেওয়া, পথে ঘাটে নিজের খেয়ালে বাউলের একতারা নিয়ে গান গাওয়া, চার বেহারার পালকি কাঁধে হেলে দুলে চলার দৃশ্য সবই রয়েছে মণ্ডপে। বৃত্তাকার মণ্ডপ সেজেছে পুরুলিয়ার ছৌ নাচের মুখোশ, বাঁকুড়ার ঘোড়া-সহ বাংলার বিভিন্ন জেলার পুতুলের ছবিতে। রয়েছে হাতে আঁকা বেশ কিছু পটচিত্রও। শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহার করা হয়েছে নারকেল ছোবড়া, পাট, বাঁশ, ডালের বড়ি, ধান-সহ নানা সামগ্রী। মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে রয়েছে বাহারি রঙিন আলোও। ক্লাবের কর্মকর্তাদের এক জন পার্থ নন্দীর কথায়, “আমাদের মণ্ডপে গ্রাম বাংলার রুচি, সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। বাড়তি আকর্ষণ দুই বাউল শিল্পী। তাঁরা মণ্ডপের মধ্যেই দর্শকদের গান শোনাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন