পনেরো বছর আগে বংশ একাদশের জালে বল জড়িয়েছিলেন তিনি। এ বার ভোটের মাঠে খেলতে নেমেও একের পর এক গোলে শট করলেন ‘মহাগুরু’। ক্ষণে ক্ষণে ‘গুরু, গুরু’ ধ্বনিতে ফেটে পড়ল জনতা।
১৯৯৯ সালের ১৬ জানুয়ারি রানিগঞ্জের কুনস্তরিয়ায় প্রদর্শনী ম্যাচে মিঠুন চক্রবর্তী একাদশের মুখোমুখি হয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী বংশগোপাল চৌধুরীর একাদশ। ৭০ মিনিটের খেলায় শেষ লগ্নে মিঠুনের গোলে সে বার হেরে যায় মন্ত্রীর দল। বংশগোপালবাবু এ বার আসানসোল লোকসভার সিপিএম প্রার্থী। আর সেখানেই তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেনের সমর্থনে শুক্রবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনটি জনসভা করলেন সদ্য তৃণমূলের হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ হওয়া মিঠুন। শেষ সভাটি হল সেই রানিগঞ্জেই।
ডোরাকাটা নীল জামা, কালো ট্রাউজার্সে মঞ্চে উঠে এ দিন মিঠুন ছিলেন খোশমেজাজে। কোথাও দাবি করলেন, “দিদিকে আমরা (মমতা) প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই।” কখনও স্লোগান তুললেন, “বিজেপি বলছে হর হর মোদী, ঘর ঘর মোদী। আমি বলছি, হর ঘর দিদি, বারবার দিদি।” কখনও ঘাসফুলের দিকে আঙুল তুলে বললেন, “টিপব বোতাম এখানে, সরকার গড়ব ওখানে।” হাততালিতে ফেটে পড়ল সভা। আসানসোলে এ বার বিজেপির প্রার্থী গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর প্রচারে উপচে পড়ছে ভিড়। তাই বংশগোপালবাবু ছাড়া বিজেপি-ও এখানে তাদের কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলতে পারে বলে মনে করছে তৃণমূলেরই একাংশ। মিঠুন অবশ্য বলেন, “সমীক্ষা বলছে, রাজ্যে তৃণমূল না কি ২৮, বামেরা ১০, কংগ্রেস ৩ ও বিজেপি একটি আসন পাবে। আমাকে বলতে পারেন, বিজেপি কোন আসনটি পাবে? আমি তো বুঝতে পারছি না!” তিনি যোগ করেন, “আমাদের ২৮ থেকে ৩৮ করুন। সেখান থেকে ৪০, তার পরে ৪২। তা হলে অঙ্কের খেলায় আমাদের জোর বাড়বে।”
১৫ বছর আগে মিঠুনের গড়া ‘বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমি’র তহবিল সংগ্রহের জন্য সেই ম্যাচের আয়োজক ছিল ক্লাব অশোক সঙ্ঘ। সহযোগিতা করেন বংশগোপালবাবু। মন্ত্রী একাদশে খেলেছিলেন এই শিল্পাঞ্চলের খেলোয়াড়েরা। আর মিঠুনের হয়ে মাঠে নামেন সুব্রত ভট্টাচার্য, গৌতম সরকার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃশানু দে, বিকাশ পাঁজির মতো এক ঝাঁক প্রাক্তন ফুটবলারেরা। এ দিন গৌতম সরকার বলেন, “সেই ম্যাচের দিন বৃষ্টি হয়েছিল। তবু মাঠে এসেছিলেন প্রচুর মানুষ। মিঠুন খেলেছিলেন পোড়খাওয়া ফুটবলারের মতোই।”
সে দিন মিঠুনের গোলে হেরেছিলেন। বংশগোপালবাবু জানান, সেই খেলার কথা তাঁর মনে আছে। কিন্তু এ দিন মিঠুনের শট জালে জড়াল কি না, এখনই সে নিয়ে মন্তব্য নয়।