পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন অভিযুক্ত আনিসুর রহমান।
এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দলবল নিয়ে বস্তি উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ উঠল শহরের পারবীরহাটা এলাকার ব্যারাকপাড়ায়। ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁদের মারধরও করা হয়। বাধা দেওয়ায় সংঘর্ষও বেধে যায় দু’পক্ষের। রবিবার সকালের এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে দু’জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদীপ রহমান, তাঁর বাবা হবিবুর রহমান, দাদা আনিসুর রহমান ওরফে পার্থ একদল তৃণমূল সমর্থককে নিয়ে ব্যারাকপাড়ার বস্তিতে আসেন। অভিযোগ, বস্তিবাসীদের প্রথমে হুমকি দেওয়া হয়। পরে বস্তির বাসিন্দারা দল বেধে প্রতিবাদ করায় সংঘর্ষ শুরু হয়। স্থানীয় প্রদীপ কর্মকার, গণেশ দে, বুবাই সাহারা জানান, প্রায় ৪০-৪৫ বছর ধরে তাঁরা ওই জমিতে স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন। প্রায় ২০ কাঠা ওই জমির মালিক ছিলেন এক মহিলা। সম্প্রতি হবিবুর রহমান তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই ওই মহিলার থেকে জমিটি কিনেছেন বলেও তাঁদের অভিযোগ। বিষয়টি জানিয়ে আদালতেও গিয়েছেন ওই জমির বর্তমান বাসিন্দারা। ফলে জমির দখলসত্ত্বের বিষয়টি আপাতত আদালতের বিচারাধীন। বস্তিবাসীদের অভিযোগ, “ওই কাউন্সিলরের পরিবার জমিটি কেনার পর থেকেই বিভিন্ন ভাবে আমাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। জমি ছেড়ে উঠে যাওয়ার জন্য হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এ দিনও বিনা প্ররোচনায় মারধর করা হয়।”
যদিও এ দিন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে আনিসুর রহমান ওরফে পার্থর পাল্টা দাবি, আট বছর আগে তাঁরা ওই জমিটি আইনগত ভাবে কিনেছেন। সেই সংক্রান্ত সব নথি তাঁদের কাছে রয়েছে। তিন-চারটি পরিবার টাকা নিয়ে উঠে যেতে রাজি হলেও বাকিরা রাজি না হওয়াতেই সমস্যা দেখা গিয়েছে। তাঁর দাবি, “যাঁরা টাকা নিয়ে জায়গা ছাড়তে চাইছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতেই এ দিন আমরা এখানে এসেছিলাম। কাউকে মারধর করা হয়নি।” কাউন্সিলর প্রদীপ রহমান অবশ্য জানান, ওই সম্পত্তির বিষয় তাঁর বাবা ও দাদা দেখাশোনা করেন। তাই যা বলবার ওঁরাই বলবেন। তাঁর কিছু বলার নেই।
বর্ধমান থানার আইসি জানান, ওই জমির মালিকেরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে বস্তিবাসীদের তরফে রবিবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এখনও কেউ গ্রেফতারও হননি।
—নিজস্ব চিত্র।