রাস্তায় উপচে পড়েছে আবর্জনা।—নিজস্ব চিত্র।
রাস্তা জুড়ে আবর্জনা ফেলছে পুরসভা—এই অভিযোগে বুধবার পুরসভার জঞ্জাল ফেলার গাড়ি ফিরিয়ে দিলেন বৈকুণ্ঠপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা।
তাঁদের দাবি, বহু বছর ধরে বর্ধমান-কালনা রোডের উপর ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নোংরা ফেলে পুরসভা। এখন ওই জায়গা উপচে আবর্জনা রাস্তাতে উঠে এসেছে। কিন্তু বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুরসভা কোনও উদ্যোগ করেনি, উল্টে রাস্তায় নোংরা ফেলছে বলে তাঁদের অভিযোগ। শহরের আবর্জনা জমে ওই এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। নানা রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তাঁরা।
মাস তিনের আগে জেলা পরিষদের পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ গোলাম জার্জিসের কাছে বিষয়টি নিয়ে স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। এ দিন গোলাম জার্জিস বলেন, “ওই এলাকায় আবর্জনা ফেলা নিয়ে বাসিন্দাদের আপত্তির কথা পুরপ্রধানের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। ওঁদের স্মারকলিপির প্রতিলিপিও পাঠিয়েছি। কিন্তু পুরসভা উত্তর দেয়নি। ফলে বিষয়টি ওখানেই থমকে রয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ সাউ ও পার্বতী দাসের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরে ওই জঞ্জালের পাহাড় থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাড়িতে বসে খাওয়া-দাওয়া করাও মুশকিল হয়ে পড়ছে। জেলা পরিষদের কাছে আবেদনপত্রও জমা দিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ না হওয়ায় এ দিন পুরসভার জঞ্জালের গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয়নি।” খবর পেয়ে পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত, উপ-পুরপ্রধান খন্দেকার মহম্মদ সহিদুল্লাহ, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা স্থানীয়দের আশ্বাস দেন, পাঁচিলের ভেতরেই জঞ্জাল ফেলা হবে। এতে এলাকাবাসী কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন বলে পুরসভার দাবি।
পুরসভার জঞ্জাল সাফাই বিভাগ জানায়, ওখানে দেড়শো বছর ধরে আবর্জনা ফেলছে পুরসভা। ওই বিভাগের পুরপিতা পরিষদ সদস্য সেলিম খান বলেন, “প্রতিদিনই প্রায় ১০০ টনের মত জঞ্জাল ফেলা হয়। জায়গাটা ভরে গিয়েছে। আমরা আবর্জনা ফেলার জন্য বিকল্প দু’তিনটি জায়গা চিহ্নিত করেছি। কিন্তু ওই জায়গাগুলি শহরের কাছাকাছি হওয়া আবশ্যক। নাহলে জঞ্জাল বহনের খরচ বাড়বে।” তাঁর দাবি, “বর্ষার জল জমে থাকায় নিচের দিকের একটি রাস্তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আমরা তাই স্থানীয় শ্মশানের পাশ দিয়ে একটি নতুন রাস্তা তৈরি করে জঞ্জালের পাহাড়ের উপরে জঞ্জাল ফেলার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু আমরা ওখান থেকে চলে আসার পরেই কিছু লোক বাঁশ দিয়ে ওই নতুন রাস্তার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। রাস্তা খুলতে আমরা পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছি।” নতুন জায়গায় জঞ্জাল ফেলার পাশাপাশি একটি বর্জ্যমুক্তির ইউনিট বসানো হবে বলেও তিনি জানান।