শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় মার তরুণীকে

বেশ কিছুদিন ধরেই যাতায়াতের পথে মেয়েটিকে উত্যক্ত করত কিছু যুবক। অশ্লীল কথাবার্তাও বলত। রুখে দাঁড়াতেই ‘প্রতিবাদের মাসুল’ দিতে হল মেয়েটিকে। অভিযোগ, মাঝরাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় ওই তরুণীকে। বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর বাবাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২৩
Share:

বেশ কিছুদিন ধরেই যাতায়াতের পথে মেয়েটিকে উত্যক্ত করত কিছু যুবক। অশ্লীল কথাবার্তাও বলত। রুখে দাঁড়াতেই ‘প্রতিবাদের মাসুল’ দিতে হল মেয়েটিকে। অভিযোগ, মাঝরাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় ওই তরুণীকে। বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর বাবাও।

Advertisement

পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বিবিরহাট এলাকার ওই ছাত্রী আপাতত কালনা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও আতঙ্ক কাটছে না তাঁর। কোনও রকমে বলে, “এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেব। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরোতেই ভয় হচ্ছে।” তাঁর বাড়ির লোকজনেদের আরও দাবি, শুক্রবার নাদনঘাট থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতে চায়নি। পরে অবশ্য ১১ জনের নামে অভিযোগ করেন তিনি। যদিও অভিযোগ না নেওয়ার কথা মানতে চায়নি পুলিশ।

কিছুদিন আগেই হাওড়ার সালকিয়ায় দুই তরুণীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় মাটিতে ফেলে লোহার রড দিয়ে মারা হয়েছিল অরূপ ভান্ডাীরকে। মারের চোটে কোমায় চলে যান তিনি। পুলিশের তরফে সাহায্য না পাওয়ার অভিযোগ করেছিল তাঁর পরিবারও। পরে হাসপাতালে অরূপের মৃত্যুর পরে রাজ্য জুড়ে ক্ষোভ ছড়ায়। সক্রিয় হতে বাধ্য হয় পুলিশ।

Advertisement

এ দিন ওই তরুণীর বাবা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্কুলের কাছেই টিউশনে গিয়েছিল মেয়ে। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কয়েকজন বান্ধবীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই এলাকার কয়েকজন উত্যক্ত করা শুরু করে ওই তরুণীকে। অশ্লীল কথাবার্তাও বলে। অভিযোগ, অপমানিত বোধ করে ওই ছাত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে ওই যুবকদের। জানতে চায়, কেন তারা এমন করছে। ওই তরুণীর বাবার দাবি, মেয়ে রুখে দাঁড়াতেই ওই যুবকেরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। মাটিতে ফেলে কিল, চড়, ঘুষি মারতে থাকে মেয়েকে। ইতিমধ্যে ওই বান্ধবীরা খবর দেয় মেয়েটির বাড়িতে। খবর পেয়ে ছুটে গেলে ওই ছাত্রীর বাবাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

নাদনঘাট থানায় দায়ের করা অভিযোগে মেয়েটির বাবা জানান, শুধু মারধরই নয়, মেয়ের জামাকাপড় ছিঁড়ে শ্লীলতাহানিও করে ওই যুবকেরা। গলার সোনার চেন ছিনিয়েও নেয়। পরে এলাকার হারু মোল্লা নামে এক যুবকের উস্কানিতে বেশ কিছু লোকজন রামদা, লাঠি-সহ অস্ত্র নিয়ে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ। ভোজালি দিয়ে আঘাত করা হয় ওই তরুণীকে। ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করলে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয়।

কালনা মহকুমা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ওই ছাত্রী দাবি করে, ওই দিনই নয়, দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলে যাতায়াতের পথে তাঁকে উত্যক্ত করত ওই যুবকেরা। এ দিন আর সহ্য করতে না পেরেই প্রতিবাদ করেন তিনি। মেয়েটির পাশে বসে তাঁর মা বলেন, “চোখ বুজলেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার ঘটনার কথা মনে পড়ছে। সামনে মেয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। কি জানি কি হবে।” চাপে রয়েছে পুরো পরিবারই। পুলিশের কাছে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন তাঁরা।

নাদনঘাট থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন