স্বজনপোষণে অভিযুক্ত কাউন্সিলর, মানল পুরসভা

দলীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে মহকুমা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট পেশ করছে তৃণমূল পরিচালিত গুসকরা পুরসভা। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি গুসকরার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে গরিবদের জন্য বাড়ি তৈরির প্রকল্পে নিজের ঠাকুমাকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৪ ০০:১৪
Share:

দলীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে মহকুমা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট পেশ করছে তৃণমূল পরিচালিত গুসকরা পুরসভা।

Advertisement

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি গুসকরার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে গরিবদের জন্য বাড়ি তৈরির প্রকল্পে নিজের ঠাকুমাকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, কাউন্সিলরের কাছে বারবার আবেদন করেও যেখানে সরকারি সাহায্য মেলে না, সেখানে আত্মীয়কে সুবিধে দেওয়া অনুচিত। জেলাশাসক, মহকুমাশাসক (উত্তর), আউশগ্রাম ১-এর বিডিও ও পুরপ্রধানের কাছে গণসাক্ষর করে চিঠিও দেন তাঁরা।

এই ঘটনার কথা আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয় গত ১৭ সেপ্টেম্বর। তখন গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান বুর্ধেন্দু রায় অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিলেও, মৃত্যুঞ্জয়বাবু তা অস্বীকার করেন। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন ছিল, ঠাকুমা গরিব হলেও কী তাঁকে কোনও সরকারি সুবিধা দেওয়া যাবে না? এরপরেই জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, মহকুমাশাসক (উত্তর) স্বপন কুণ্ডুকে ওই ঘটনা ও এলাকার মানুষদের সরকারি প্রকল্প যেমন, বিধবাভাতা, বার্ধক্যভাতা, পরিশ্রুত পানীয় জলের সরবরাহ না পাওয়ার ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলেন। মহকুমাশাসক গুসকরা পুরপ্রধানকে চিঠি দিয়ে ওই ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে বলেন পরের দিন অর্থাৎ ১৯ সেপ্টেম্বর। মহকুমাশাসকের দাবি, তারপরে প্রায় একমাস কেটে গেলেও গুসকরা পুরসভার তরফে কোনও রিপোর্ট মেলেনি। অভিযোগকারীদের তরফে সুদামা বাগদেরও দাবি, প্রশাসনের তরফে দেওয়া দুটি চিঠির কোনওটিই তাঁরা সাত অক্টোবরের আগে পাননি।

Advertisement

কিন্তু এখনও কেন রিপোর্ট পাঠাতে পারেনি পুরসভা? পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়ের দাবি, “আমরা ইতিমধ্যে বোর্ড মিটিংয়ে ওই ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রিপোর্ট তৈরি করতে সময় লেগেছে। গোটা ঘটনার কথায় মহকুমাশাসককে জানাব।” রিপোর্টে স্বজনপোষণের অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হলে বুর্ধেন্দুবাবুর দাবি, “আমরা সমস্ত ঘটনার কথাই ওই রিপোর্টে জানিয়েছি। মৃত্যুঞ্জয়বাবু যে তাঁর ঠাকুমাকে বাড়িটি দিয়েছেন, সেই বাড়ির ব্যাপারে চার কিস্তির মধ্যে তিন কিস্তির টাকা নিয়ে নেওয়া হয়েছে পুরসভার কাছ থেকে, বাকি রয়েছে চতুর্থ কিস্তির ৫২ হাজার টাকা, তাও জানানো হচ্ছে। তবে তাঁর বাবা যে বিপিএল তালিকাভুক্ত তাও জানিয়েছেন মৃত্যুঞ্জবাবু। সে প্রমাণপত্রও আমরা রিপোর্ট দিয়েছি। এ বার প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে। খোদ কাউন্সিলরই অবশ্য বারবার তাঁর এই কাজ করাটা যে ভুল হয়েছে, তা কবুল করেছেন।” এ দিন ওই কাউন্সিলর বলেন, “যা করেছি, তা বুঝেই করেছি। এখন আমার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিলে আমি প্রশাসনকে সমস্ত কথা বলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন