চলছে সভা। —নিজস্ব চিত্র।
সারদা থেকে শিল্প, সব নিয়েই শাসকদলকে বিঁধলেন বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি শাকিল আনসারি।
বুধবার মঙ্গলকোটের ধারসোনা এলাকায় সভা করে তিনি বলেন, “রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রী, এ বার সিবিআইয়ের কোপে পড়তে চলেছেন।” সভাস্থল থেকে বিজেপি কর্মীরা ‘ববি হাকিম, ববি হাকিম’ বলে চিৎকার শুরু করেন। শাকিল আনসারি আরও বলেন, “একের পর এক নেতা, মন্ত্রীরা জেলে রয়েছেন। কেউ কেউ জেলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। এর পর ওই দলটাকে চালাবে কে?”
এ দিন দুপুরে ধারসোনা বাসস্টপের গায়ে এক চিলতে ফাঁকা জায়গায় সভা করে বিজেপি। মঙ্গলকোটের ইট্যা থেকে ধারসোনা যাওয়ার মোরাম রাস্তার দু’ধার কিংবা ধারসোনা বাসস্টপ এলাকা বিজেপির পতাকায় ছেয়ে গিয়েছিল। সংখ্যালঘুদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। তার মধ্যেও সকাল থেকে দলীয় কর্মীদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে বলে বিজেপি বারবার অভিযোগ করে। বিজেপির মঙ্গলকোট ব্লকের সভাপতি শিশির ঘোষের অভিযোগ, “সকালে মঞ্চ তৈরি থেকে পতাকা লাগানো সবেতেই বাধা দিয়েছে তৃণমূল। পতাকা টাঙাতে গিয়ে শাসকদলের হাতে ধারসোনার কাছে পলাশী মোড়ে আমাদের তিন কর্মী প্রহৃত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।”
এ দিন দুপুরে সভা শুরুর পরেও বিজেপি নেতারা বারবার মাইকে অভিযোগ করতে থাকেন, ইট্যা থেকে ধারসোনা আসার রাস্তা আটকে দিচ্ছে তৃণমূল। ফলে সভায় আসার গাড়িগুলি আটকে পড়ছে। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের একাংশও মঞ্চের কাছে এসে নেতাদের কাছে অভিযোগ করতে থাকেন, “রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কর্মীরা আমাদের বলছে, আমরা কিছু করতে পারব না। যা করার আপনারা করুন।” উত্তেজনা বাড়ছে দেখে মঙ্গলকোটের ওসি আকাশ মুন্সি পুলিশ বাহিনী নিয়ে ধারসোনা-ইট্যা মোরাম রাস্তায় যেতেই বিজেপির পতাকা লাগানো একের পর এক গাড়ি সভার কাছে আসতে শুরু করে। বিজেপির মঙ্গলকোট ব্লক কমিটির সদস্য রানাপ্রসাদ গোস্বামীর অভিযোগ, “সভায় এলে বোমা মারার হুমকি দিয়েছিল শাসকদলের লোকেরা। সেই ভয়কে উপেক্ষা করেই এ দিন সভায় এসেছেন মানুষজন।” সভায় উপস্থিত বেশ কয়েক জনও বলেন, “তৃণমূল সরকারের উপর ও স্থানীয় নেতাদের উপর নানা কারণে আমরা বীতশ্রদ্ধ। তাই বিজেপির পথে পা বাড়িয়েছি।” সভা শেষে গোলমালের আশঙ্কা করে এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাসও পুলিশ বাহিনী নিয়ে ধারসোনায় হাজির ছিলেন। তবে তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লকের সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বিজেপির সভা ঘিরে দিনভর পুলিশ টহল দিয়েছে। তারাই ভাল বলতে পারবে, আমাদের কেউ রাস্তা আটকেছে কি না।” তাঁর দাবি, “রাস্তার ধারে ছোট জমিতে সভা করেও জমায়েত হয়নি দেখে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।”
এ দিনের সভায় শাকিল আনসারি আরও বলেন, “এ রাজ্যে শিল্প নেই কিন্তু রাজনীতি আছে। সংখ্যালঘুদের জন্য শাসক দলের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি রয়েছে।” মাদ্রাসায় আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করারও দাবি জানান তিনি।