হামলায় অভিযুক্ত ১৩, বিজেপির দল কালনায়

সভা চলাকালীন হামলার অভিযোগ উঠেছিল রবিবার রাতেই। সোমবার সকালে তৃণমূলের এক নেতা-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে বোমা ছোড়া, ভাঙচুর, মারধরের অভিযোগ করল বিজেপি। তৃণমূল আগেই দাবি করেছিল, বিজেপির কিছু লোক বেগপুর পঞ্চায়েতের খোটরা-বিটরা এলাকায় বোমা বাঁধছিল। এলাকাবাসী তা জানতে পেরে পুলিশকে খবর দিয়েছে। সোমবার ওই এলাকার এক বাসিন্দা অভিযোগও করেন যে রবিবার বিকেলে জনাপাঁচেক যুবক বোমা বাঁধার কাজ করছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৬
Share:

হাসপাতালে বিজেপির প্রতিনিধি দল। নিজস্ব চিত্র।

সভা চলাকালীন হামলার অভিযোগ উঠেছিল রবিবার রাতেই। সোমবার সকালে তৃণমূলের এক নেতা-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে বোমা ছোড়া, ভাঙচুর, মারধরের অভিযোগ করল বিজেপি।

Advertisement

তৃণমূল আগেই দাবি করেছিল, বিজেপির কিছু লোক বেগপুর পঞ্চায়েতের খোটরা-বিটরা এলাকায় বোমা বাঁধছিল। এলাকাবাসী তা জানতে পেরে পুলিশকে খবর দিয়েছে। সোমবার ওই এলাকার এক বাসিন্দা অভিযোগও করেন যে রবিবার বিকেলে জনাপাঁচেক যুবক বোমা বাঁধার কাজ করছিল। পুলিশ দুটি ঘটনারই তদন্ত শুরু করেছে।

সোমবার কালনা মহকুমা হাসপাতালে হামলায় জখম বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিজেপির রাজ্য পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল। চার সদস্যের ওই দলে ছিলেন অমলেন্দু চ্যাটার্জি, সুব্রত চ্যাটার্জি, সুভাস সরকার এবং প্রতাপ ব্যানার্জি। এঁদের মধ্যে প্রথম দু’জন দলের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বর্ধমান পূর্ব এলাকার দলীয় সভাপতি রাজীব ভৌমিকও। প্রতিনিধি দলের সদস্যদের দাবি, কালনা১ ব্লকের সভাপতি ধনঞ্জয় মণ্ডল-সহ ১১ জন আহত কর্মীই জানিয়েছেন যে, রবিবার বেগপুর পঞ্চায়েতের খোটরা-বিটরা এলাকায় দলের কর্মী-বৈঠক চলাকালীন অতর্কিতে হামলা চালায় তৃণমূলের কয়েকজন। বোমা ছোড়া হয়, হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। বোমার আঘাতেই আহত হন তাঁরা। সোমবার সকালে বিজেপির তরফে কালনা থানায় ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ইনসান মল্লিক-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূলের ওই নেতাই ভয় দেখিয়ে দলের কাজে ব্যবহৃত স্ট্যাম্প, প্যাড-সহ নানা জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়।

Advertisement

তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রবিবারের ঘটনাটিকে অরাজনৈতিক আখ্যা দিয়ে তৃণমূলের কালনা ১ ব্লক সভাপতি উমাশঙ্কর সিংহ রায় বলেন, “বিজেপি যদি ওই এলাকায় বৈঠক করত তাহলে থানার অনুমতি নিত। কিন্তু আমরা খবর পেয়েছি কিছু লোকজন ওই এলাকায় দুষ্কর্ম করতে গিয়েছিল। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।” অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ইনসান মল্লিকের দাবি, “বিজেপি যে সময়ের ঘটনার কথা বলছে তখন আমি এলাকাতেই ছিলাম না। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই আমাদের কর্মী-সমর্থকদের নাম মিথ্যে মামলায় জড়িয়েছে বিজেপি।” রবিবার রাতে তিনি দাবি করেছিলেন, কয়েকজন বিজেপির লোক ওই গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের কাছাকাছি বোমা বাঁধছিল। এলাকার মানুষ জানতে পেরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ওই এলাকার এক বাসিন্দা আর একটি অভিযোগ করে জানান, রবিবার বিকালে পাঁচ-ছয় জনের একটি দল বোমা বাঁধার কাজ করছিল। ওই জায়গা থেকে বোমা তৈরির কিছু পাথর মিলেছে বলেও পুলিশের দাবি।

তবে বিজেপির জেলা সভাপতি রাজীববাবুর দাবি, পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে তৃণমূল ওই এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়ে মানুষের মনে ভীতি তৈরি করেছে। এখন বিজেপির প্রভাব বাড়তেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তারা। তাই পরিকল্পিত ভাবে আক্রমণ করেছে এবং বোমা বাঁধার অভিযোগও তুলছে। এ দিন হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষবাবুও বলেন, “আমাদের ছেলেরা ওখানে বোমা বাঁধতে গিয়েছিল এ কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। তাছাড়া আমদের লোক যদি বোম মারে তাহলে দলীয় কর্মীর পায়ে কেন বোমের স্প্লিন্টার লাগবে।” তাঁর দাবি, “ পুলিশ যে পাথর উদ্ধার করেছে তা তৃণমূলের লোকজনই রেখেছে।” পুলিশের কাছে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। আজ, মঙ্গলবার কালনা-কাটোয়া মহকুমা জুড়ে বেলা ১২টা থেকে ঘণ্টা দুয়েকের পথ অবরোধ কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনাও করেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন