—ফাইল চিত্র।
পুলওয়ামা-কাণ্ড এবং সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রেক্ষিতে দেশপ্রেমের হাওয়া তুলে ভোটের বৈতরণী পার হওয়ার কথা বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন কর্নাটকের বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা। সেই বিতর্কের রেশ কাটার আগেই এ বার বাংলায় বিজেপির নির্বাচনী বৈঠকে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট করে দিলেন, দেশপ্রেমের আবেগই এখন তাঁদের ভোটবাক্সের মূল রসদ!
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের ‘স্বার্থ’ নিয়ে রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের। কিন্তু দিলীপবাবুদের মনোভাবের কথা জেনে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘জওয়ানদের রক্ত নিয়ে ওরাই যে রাজনীতি করছে, দলনেত্রী আগেই সে অভিযোগ করেছিলেন। আজ ওরা নিজেদের মুখেই তা স্বীকার করে নিল!’’ নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে দিলীপবাবু— সকলেই যুদ্ধ জিগির এবং দেশপ্রেমের আবেগের ‘রাজনীতিকরণ’ ঘটাচ্ছেন বলে সরব হয়েছে সিপিএমও। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘যুদ্ধের হাওয়া তুলে এই রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। দেশকে রক্ষা করতে লড়ছেন জওয়ানেরা আর বিজেপি রাজনীতি করছে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা দায়িত্ববোধ দেখিয়েছে, বিজেপি তা করেনি।’’
জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রেক্ষাগৃহে এ দিন দিলীপবাবু বলেন, ‘‘এত দিন এ রাজ্যে আমাদের সংগঠন শক্তিশালী ছিল না। এ বার আমরা সংগঠনকে শক্তিশালী করেই ভোটে নামব। রাজনীতিতে দেশপ্রেমের প্রভাব পড়বে।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘গোটা দেশ যখন দেশপ্রেমের জোয়ারে ভাসছে, দিদিমণি তখন উল্টো পথে হাঁটছেন। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের তথ্য জানতে চাইছেন। এ তো আমাদের বায়ুসেনাকে অপমান করার সামিল!’’ একই অভিযোগ তুলেছেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার অবশ্য পাল্টা মন্তব্য, ‘‘জনগণ বুঝতে পারছে, কারা সেনাকে অপমান করছে।’’
দলীয় কর্মীদের এ দিনের সভায় দিলীপবাবু জানান, রাজ্যের যে সব সেনা বিভিন্ন সময় জঙ্গিদের হাতে নিহত হয়েছেন, তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলের তরফে বিশেষ ‘সৈনিক’ সম্মান জানানো হবে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের কটাক্ষ, বিজেপির এই কর্মসূচিতেও স্পষ্ট, জওয়ানদের নিহত হওয়ার ঘটনাকে তারা ভোটবাক্সে ঘোরাতে চাইছে।