সুনীল দেওধর এবং দিলীপ ঘোষ।
ত্রিপুরা বিজয়ের পর পশ্চিমবঙ্গের গা থেকে নীল-সাদা রং তুলতে সুনীল চাইছেন এ রাজ্যের বিজেপি কর্মীরা। মানে, সুনীল দেওধর। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে ত্রিপুরা বিজেপি-র পর্যবেক্ষক। সে রাজ্যে দলকে দেড় শতাংশ থেকে এক লাফে ৪৩ শতাংশ ভোটে তুলে নিয়ে গিয়ে সিংহাসনে বসানোর প্রধান জাদুকর বলে যাঁকে মানছেন বিজেপি কর্মীরা।
ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটের ফল বেরিয়েছে শনিবার। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পড়শি রাজ্যে বিজেপি-র অন্দরে গুঞ্জন— এ বার তা হলে এখানে সুনীলই আসুন, থাকুন এবং জয় করুন। বঙ্গ বিজেপি-র কর্মীদের আলাপচারিতায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, এ রাজ্যের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে দল ভোট বাড়াচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কৈলাস দিল্লি এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে এ রাজ্যে যাতায়াত করেন। আর সুনীল অন্তত দু’বছর বাড়ি ভাড়া করে ত্রিপুরায় থেকেছেন। এ রাজ্যে দায়িত্ব পেলে নিশ্চয়ই এখানে এসেও থাকবেন। আর কৈলাসের রাজ্য মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোট এ বছরই। ফলে সেখানে তাঁকে যথেষ্ট সময় দিতে হবে।
বিজেপি-র রাজ্য যুব মোর্চার সদস্য কৌশিক ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সুনীল দেওধরজি আমাদের এখানেও আসবেন। এখনকার নেতাদের সঙ্গে উনিও যোগ দিয়ে দিদিকে উৎখাত করে ছাড়বেন।’’ বস্তুত, ত্রিপুরা ম্যাজিকের পর বহু রাজ্যেরই বিজেপি সুনীলকে চাইছে। যেমন— রবিবারই পঞ্জাব এবং কর্নাটক থেকে ফোনে অভিনন্দন-বার্তা পান সুনীল। দুই রাজ্যেরই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হওয়ার জন্য! বাস্তবে তেমন দায়িত্ব দল তাঁকে এখনও দেয়নি। আগামী পাঁচ বছর ত্রিপুরায় থেকেই নতুন বিজেপি সরকারকে সাহায্য করতে চান তিনি। বলছেন, ‘‘দল অন্য কোনও রাজ্যে দায়িত্ব দিলে তা পালন করব।’’
আরও পড়ুন: বঙ্গে প্রভাব কী, শুরু বিতর্ক
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি অবশ্য সুনীলের প্রয়োজন বোধ করছেন না। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘আমরাই এক এক জন সুনীল দেওধর। আমরাই তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করব।’’ তবে দিলীপবাবুর এই প্রত্যয়ের পরেও এ দিনই লেকটাউনে বিজেপি-র যুব মোর্চা কর্মীরা তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ।
ত্রিপুরায় গেরুয়া ঝড়ের পর দেওধরেরা ধরেই রেখেছেন, আগামী দিনে বাংলায় বিজেপি-কে রুখতে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস এবং সিপিএম-ও একজোট হবে। ঘটনাচক্রে, এ দিনই প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী বহরমপুরে বলেন, ‘‘বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়তে হলে কংগ্রেসের নেতৃত্বেই আসতে হবে।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন কৃষ্ণনগরে বলেন, ‘‘সব অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াইয়ে আহ্বান জানাচ্ছি। কিন্তু সিপিএম রাজি নয়! ওরা এ ভাবেই শেষ হবে।’’