West Bengal News

ভাঙড়ে জমি কমিটির মিছিলে সশস্ত্র হামলা, হত-১, উত্তপ্ত বিস্তীর্ণ এলাকা

জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়ছেন যাঁরা, তাঁদের সমর্থনে শুক্রবার মিছিল বেরিয়েছিল মাছিভাঙা থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৮ ১৯:৫৫
Share:

গুলিবিদ্ধ হাফিজুলকে ঘিরে কমিটির অন্য সদস্য-সমর্থকরা। ছবি: সংগৃহীত।

ফের অশান্ত ভাঙড়। গুলি-বোমায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নতুনহাট এলাকা। গুলিতে মৃত্যুও হয়েছে এক জনের।

Advertisement

জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়ছেন যাঁরা, তাঁদের সমর্থনে শুক্রবার মিছিল বেরিয়েছিল মাছিভাঙা থেকে। নতুনহাট এলাকায় পৌঁছতেই মিছিলে সশস্ত্র হামলা হয়েছে বলে কমিটির অভিযোগ। তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে কমিটির দাবি। আরাবুল অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে, আরাবুলকে গ্রেফতারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের চাপে বেশ কিছু দিন ধরে ভাঙড়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যথেষ্ট কোণঠাসা তৃণমূল তথা আরাবুল ইসলাম। মাছিভাঙা, খামারআইট-সহ বেশ কিছু গ্রামে মাসের পর মাস ধরে ঢুকতেই পারছে না শাসক দল। জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত হয়েছে গ্রামগুলি।

Advertisement

তৃণমূলের সঙ্গে কমিটির সংঘাত বহু দিন ধরেই চলছে। গত বছরখানেকে একাধিক বার সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়েছে দু’পক্ষ। তবে অনেকগুলি গ্রামেই হারানো জনভিত্তি এখনও পুনরুদ্ধার করতে পারেনি শাসক দল।

পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছোড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিটি। তাই কমিটির ব্যানারে প্রার্থী দেওয়া হয় বেশ কিছু গ্রামে। তাঁদের সমর্থনে শুক্রবার বিকেলে মিছিল বার করেছিল জমি কমিটি। মিছিলটি নতুনহাট এলাকায় পৌঁছতেই সশস্ত্র হামলা হয়। বোমা পড়তে থাকে মিছিল লক্ষ্য করে। চলে গুলিও।

আবার উত্তপ্ত ভাঙড়, দেখুন ভিডিয়ো:

কমিটির অন্যতম নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর দাবি, আরাবুল ইসলামের বাহিনী গুলি-বোমা নিয়ে হামলা চালায়। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, জমি কমিটিও সশস্ত্র প্রতিরোধের পথই নেয়। হামলাকারীদের লক্ষ্য করেও পাল্টা গুলি এবং বোমা ছোড়া শুরু হয়।

আরও পড়ুন: ২০০৮ থেকে এ রাজ্যে দলগত ভোটের ওঠানামা

পুলিশ সূত্রে খবর, দু’পক্ষের সংঘর্ষে হাফিজুল মোল্লা নামে এক জনের মাথায় গুলি লাগে। তিনি কমিটির মিছিলে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বেসরকারি নিউজ চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘ভাঙড়ে আরাবুল একটা কাণ্ড ঘটিয়েছে। পুলিশকে বলেছি ওকে গ্রেফতার করতে।’’

সন্ধ্যার পরেও ভাঙড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে বলে খবর। সশস্ত্র সংঘর্ষ চলছে বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে নেই।

আরও পড়ুন: রাস্তায় দাঁড়িয়ে উন্নয়ন, কিন্তু পঞ্চায়েত দফতরে?

বিরোধী দলগুলি ভাঙড়ের ঘটনার তীব্র নিন্দা শুরু করেছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসন কী ভূমিকা পালন করছে, ভাঙড়ের ঘটনায় তা স্পষ্ট— টুইটারে মন্তব্য সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের। হামলাকারীদের পুরো দলটাকেই গ্রেফতার করার দাবি তুলেছেন সূর্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন