বন্দুক-‘বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট’ নিয়ে ভোট লুঠে ষাট ছুঁইছুই প্রৌঢ়

মাথা খাটিয়ে বিস্কুটের টিন কেটে ‘বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট’ বানিয়েছিল আক্রম আলি মোল্লা। কিন্তু ‘অ্যাকশন’-এও যেতে হল না।

Advertisement

সামসুল হুদা

বাসন্তী শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

পরনে বর্ম: আক্রম আলি মোল্লা। বাসন্তীতে। —নিজস্ব চিত্র।

ভোটের বাজার। ‘অ্যাকশন’ হতে পারে যখন-তখন! হাতে গুলি-বন্দুক আছে। কিন্তু উল্টো দিক থেকে গুলি এলে প্রাণটাও তো বাঁচাতে হবে!

Advertisement

মাথা খাটিয়ে বিস্কুটের টিন কেটে ‘বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট’ বানিয়েছিল আক্রম আলি মোল্লা। কিন্তু ‘অ্যাকশন’-এও যেতে হল না। ওই জ্যাকেটও কাজে লাগল না। বুধবার ভোরে বাসন্তীর পূর্ব লেবুখালির বাসিন্দা আক্রমের ঠাঁই হল শ্রীঘরে। এলাকার ষাট ছুঁইছুই ওই দাগি দুষ্কৃতী তদন্তকারীদের জানিয়েছে, ওই টিনের জ্যাকেটে গুলি আটকাবে না সে জানে। তবে, চোট কম লাগবে। মরতে হবে না। পুলিশ কর্তারা তো বটেই, অনেক নেতাও মানছেন, ভোট-রঙ্গের শেষবেলা জমে গিয়েছে ওই ‘বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট’-এ! আলোচনা সর্বত্র।

বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ব্লকের কিছু বুথেও পুনর্নির্বাচন হয়। গোলমাল ঠেকাতে ভোর থেকেই আগ্নেয়াস্ত্রের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছিল পুলিশ। তার মধ্যেই পুলিশের কাছে খবর আসে বহু লোক নির্দেশখালি ও পানখালি এলাকায় অস্ত্র ও বোমা নিয়ে ঘোরাফেরা করছে। তদন্তকারীরা জানান, পানিখালির মাদ্রাসা মোড়ের কাছে পুলিশের গাড়ি যেতেই এক মহিলা এসে জানান, ‘স্যর, গায়ে টিন বেঁধে অস্ত্র নিয়ে ওরা ঘুরছে। পুলিশ মহিলার পিছু নেয়। কিছুটা এগোতেই একটি মাঠের মধ্যে জ্যাকেট পরা আক্রম-সহ কয়েক জনকে বসে থাকতে দেখে পুলিশ। ধাওয়া করে পুলিশ আক্রম-সহ চার জনকে গ্রেফতার করলেও বাকিরা পালায়।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বাসন্তীর দাগি দুষ্কৃতীদের তালিকায় আক্রমের নাম রয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে একটি দোনলা বন্দুক, একটি একনলা বন্দুক, দু’টি ধারালো অস্ত্র, ৫০টি কার্তুজ, ওই জ্যাকেট এবং প্রায় এক কেজি বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার করা হয়েছে। বারুইপুর জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সঙ্গে বোমা রাখা ঝুঁকির। তা ফেটে যেতে পারে। তাই মনে হয় ওরা বোমার মশলা নিয়ে ঘুরছিল। প্রয়োজন মতো বোমা বেঁধে হামলা করার পরিকল্পনা ছিল।’’

আরও পড়ুন: সকালেই পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্যপালের রিপোর্ট, তার পরেই হিংসা নিয়ে চড়া স্বর প্রধানমন্ত্রীর

কিন্তু কার উপরে হামলার পরিকল্পনা ছিল আক্রমদের? জেরায় তদন্তকারীরা জেনেছেন, যে দলের থেকে বরাত মিলত, সে দলের হয়েই কাজ করবে বলে তারা মাঠে নেমেছিল। বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত ঘোষ বলেন, ‘‘আক্রমের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া দোনলা বন্দুকটিতে নির্মাতা হিসেবে একটি বিদেশি সংস্থার ছাপ রয়েছে। বন্দুকটি প্রায় একশো বছরের পুরনো। মনে হচ্ছে কোনও ধনী বনেদি পরিবার থেকে চুরি করা। রহস্য উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন