১২, ১৪, ১৮ মে ভোট? রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে কমিশন

কমিশনের যুগ্মসচিব শান্তনু মুখোপাধ্যায় জানান, আজ শনিবার দুপুর একটায় রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কমিশন-কর্তাদের বৈঠক হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৬
Share:

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ

কী করবে কমিশন?

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরে এই প্রশ্নটাই এখন সবার মুখে। ভোটের নতুন দিনক্ষণ কী হবে তা নিয়ে শুক্রবার রাত পর্যন্ত আলোচনা হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অন্দরে। ঘরোয়া আলোচনা হয়েছে সরকার পক্ষের সঙ্গেও। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের দিনক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন সম্ভাবনার বিষয়ে এ দিনই রাতে মুখ্যমন্ত্রীকে অবহিত করেন মুখ্যসচিব।

কমিশনের যুগ্মসচিব শান্তনু মুখোপাধ্যায় জানান, আজ শনিবার দুপুর একটায় রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কমিশন-কর্তাদের বৈঠক হবে। তার পরই সরকারি ভাবে নবান্নের সঙ্গে আলোচনা করবে কমিশন। কথা হবে পুলিশ-কর্তাদের সঙ্গেও।

Advertisement

এখন যা পরিস্থিতি তাতে আগের নির্ঘণ্ট মেনে ১ মে থেকে ভোট শুরুর সম্ভাবনা কার্যত নেই বলেই সংশ্লিষ্ট মহলগুলির অভিমত। কমিশনের একটি সূত্রের বক্তব্য, হাইকোর্টের রায় মেনে মনোনয়ন পেশের মেয়াদ অন্তত এক দিন বাড়াতে হবে। তার পর সেই মনোনয়নের বৈধতা পরীক্ষা করতে হবে। এর পর রয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্ব। আগের নির্ঘণ্টে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য ছ’দিন সময় রাখা হয়েছিল। কমিশনের ওই অংশের মতে, এখন সেই সময়সীমা কমালেও মনোনয়ন পেশ থেকে প্রত্যাহার— পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে পাঁচ-ছয় দিন লেগে যাবে।

এর পর রয়েছে প্রচার পর্ব। পঞ্চায়েত আইনে কিছু বলা না থাকলেও সাধারণ ভাবে প্রচারের জন্য সপ্তাহ দুয়েক সময় দেওয়া হয়। সেই রীতি মানলে মে মাসের মাঝামাঝির আগে ভোট শুরু করা সম্ভব নয় বলেই কমিশনের একাংশের অভিমত। তবে এ ব্যাপারে সরকার কী ভাবছে, তা-ও গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে ১৬ মে রমজান মাস শুরুর আগেই ভোটপর্ব শেষ করার কথা বলেছিল নবান্ন। এখন তারা কী অবস্থান নেয় সেটা দেখার।

দেখুন ভিডিয়ো

কমিশন সূত্রে খবর, আগামী সোমবার মনোনয়নপত্র জমার দিন ধার্য হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মনোনয়ন পরীক্ষা হতে পারে বুধবার। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় দেওয়া হতে পারে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত।

কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, শুধু ভোটের প্রচার নয়, ভোটের প্রস্তুতি— অর্থাৎ ব্যালট পেপার ছাপা থেকে শুরু করে অন্যান্য বন্দোবস্ত করার জন্যও সপ্তাহ দুয়েক সময় দরকার। সে ক্ষেত্রে ভোট শুরু করতে হবে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। তখন ভোট গড়াবে রমজানের মধ্যে। কমিশনের এক কর্তা অবশ্য জানাচ্ছেন, আদালতের রায়ে ২০১৩ সালে রমজানের মধ্যেই পাঁচ দফায় পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল।

গত ৩১ মার্চ তিন দফায় ভোট ঘোষণা করেছিল কমিশন। প্রথম দফায় দক্ষিণবঙ্গের ১২টি জেলা, দ্বিতীয় দফায় বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ এবং তৃতীয় দফায় উত্তরবঙ্গের ছ’টি জেলার ভোট ছিল। কিন্তু নতুন নির্ঘণ্টে জেলাগুলির পুর্নবিন্যাস হতে পারে বলে পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর।

জটিলতা রয়েছে আরও কিছু বিষয়েও। ১২ এপ্রিল মনোনয়ন প্রত্যাহার শুরুর দিনেই ভোট-প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু কমিশন যখন বিজ্ঞপ্তি জারি করে, তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। ফলে অনেক জেলাতেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হয়েছিল সে দিন। সেই সব মনোনয়ন প্রত্যাহার বৈধ কি না, সে ব্যাপারে এ দিন স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেনি কমিশন। এক কর্তার কথায়, ‘‘অনেকগুলি বিষয়েই ব্যাখ্যা প্রয়োজন। জেলাগুলি থেকেও জানতে চাওয়া হয়েছে। রায় খুঁটিয়ে দেখে প্রতিটি বিষয়ের ব্যাখা দেওয়া হবে।’’ তবে ১১ এপ্রিল হওয়া মনোনয়ন পরীক্ষা বৈধ বলেই জানাচ্ছে কমিশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন