পঞ্চায়েত ভোটের আগে হিংসায় তৃণমূলের নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ল। শাসক দলের নেতৃত্ব রবিবার বলেছিলেন, তাঁদের সাত জন খুন হয়েছেন বিরোধীদের হাতে। মুর্শিদাবাদে সোমবার বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে এক তৃণমূল কর্মীর। দলের তরফে এ দিন বিকেলে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ন’জন ‘শহিদে’র। আর সন্ধ্যায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজ্যে এ পর্যন্ত ১৪ জন তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন।
বিরোধীরা অবশ্য শাসক দলের অভিযোগ মানছে না। তাদের পাল্টা বক্তব্য, নিহতের সংখ্যা যা-ই হোক, তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলের বিরোধেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে আর তার দায় চাপানো হচ্ছে বিরোধীদের ঘাড়ে।
নবান্ন থেকে বেরোনোর সময়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যারা হামলা করছে, তারাই ভোট এড়াতে এ দিক-ও দিক যাচ্ছে, লুঠ করছে, আগুন জ্বালাচ্ছে, বাড়ি ভাঙছে। আবার অপপ্রচার, কুৎসা করছে!’’ মুখ্যমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, ‘‘আমি কোনও খুন চাই না। সে সাধারণ মানুষই হোক বা কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মীই হোক।’’
প্রশাসনের তরফে তৈরি করা যে তালিকা হাতে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের নিশানা করেছেন, তৃণমূলের দেওয়া তালিকার বাইরেও সেখানে রয়েছে আরও পাঁচ জনের নাম— দিনহাটার আবু মিঞা, জয়নগরের সেলিমা গাজি, হিঙ্গলগঞ্জের সইদা বিবি, বনগাঁ গোপালনগরের গোপাল দেবনাথ ও বেলডাঙার আয়ুব আলি মণ্ডল।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের কর্মীরা খুন হচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু একটা কথা ওঁরা বলছেন না। তৃণমূলের লোক খুন হচ্ছে তৃণমূলেরই হাতে। তৃণমূলের ঝান্ডা ধরলেই কেউ আর নিরাপদ নয়!’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে। আর পুলিশকে দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বিরোধী দলের লোকজনকে।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘’১৪ তো কম, সংখ্যাটা ১০০ হবে! তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের পরিণতি এ সব। প্রশাসনে এবং দলে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।’’