বেনজির কাণ্ড! গণনা কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকে ছাপ্পা মারা হচ্ছে ব্যালটে। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের দিনে অবাধ ছাপ্পা দেখে চোখ কপালে উঠেছিল স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীরও। গণনার দিনে তার চেয়েও বেনজির কাণ্ড ঘটল বাংলায়। গণনাকেন্দ্রের মধ্যে ঢুকে ব্যালটে ছাপ্পা মারা হল। ছাপ্পা শুরুর আগে পর্যন্ত যে প্রার্থী এগিয়ে ছিলেন, তাঁর দাবি, ওসি-র সামনেই হয়েছে ছাপ্পা। কিন্তু পুলিশ সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় থেকেছে।
কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের ভোটগণনা চলছিল মাজদিয়ার গণনাকেন্দ্রে। শিবনিবাস গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০১ নম্বর বুথের গণনা চলছিল যে কাউন্টারে, আচমকাই হামলা হয় সেখানে। হামলা করেন গণনাকেন্দ্রে খাবার ও জল সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ভোটকর্মীদের একাংশ।
প্রথমে ওই বুথের নির্দল প্রার্থী নীলাদ্রি সুকুলকে মারধর করে গণনাকেন্দ্র থেকে বার করে দেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু তিনি না বেরনোয় তাঁর সামনেই ঝপাঝপ ছাপ্পা মারা শুরু হয়। যে সব ব্যালটে ছাপ্পা দেওয়া হয়, সেগুলিতে আসলে ভোট পড়েছিল নির্দল প্রার্থীর পক্ষে। অন্য প্রতীকে ছাপ দিয়ে সে সব ব্যালট বাতিল করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: গ্রামবাংলা দখলে রাখছে তৃণমূল, দু’নম্বরে উঠে এল বিজেপি
গণনাকেন্দ্রে ঢুকে ছাপ্পা মারার ছবি ধরা পড়েছে ক্যামেরাতেও। দেখে নিন সেই ভিডিয়ো:
নির্দল প্রার্থী নীলাদ্রি সুকুলের দাবি, তিনি তৃণমূল প্রার্থীর চেয়ে ২২০ ভোটে এগিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময়েই হামলা হয় গণনার টেবিলে। স্থানীয় ওসি-র সামনেই একের পর এক ব্যালটে ছাপ্পা মারতে থাকে হামলাকারীরা, কিন্তু পুলিশ তাদের আটকানোর কোনও চেষ্টাই করেনি। অভিযোগ নির্দল প্রার্থীর। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার এই অভিযোগ সম্পর্কে নদিয়ার পুলিশ সুপার সন্তোষ পাণ্ডের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাঁকে একাধিক বার ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন কেটে দেন।
আরও পড়ুন: গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, বোর্ড গঠনের সময় আরও রক্তপাত হবে
গণনাকেন্দ্রে ঢুকে ছাপ্পার ঘটনার জেরে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয় মাজদিয়ায়। গণনাকেন্দ্রের সামনে বোমাবাজিও হয় বলে অভিযোগ। তার পরে নির্বাচন কমিশন গণনা স্থগিত করে দিয়েছে। জেলাশাসক বলছেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়ে আধিকারিকরা ওই গণনাকেন্দ্রে যাচ্ছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। তার পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’