নারায়ণচন্দ্র ধাড়া ও বিজয় ধাড়া। —নিজস্ব চিত্র
এক জন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। অন্য জন সবে রাজনীতিতে পা রেখেছেন। গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির ২৭ নম্বর আসনের ভোট সম্পর্কে কাকা-ভাইপোর দ্বৈরথে জমে উঠেছে।
পূর্ব বর্ধমানের গলসির গ্রাম ও স্টেশন সংলগ্ন এলাকার একাংশ, বাবলা ও বুঁইচি গ্রাম নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির আসনটি। সেখান থেকে জিতেই ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ হন ৬৪ বছরের নারায়ণচন্দ্র ধাড়া। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছেন ভাইপো বিজয় ধাড়া। নারায়ণবাবু বলেন, “আমি সারাজীবন কংগ্রেস আর তৃণমূল ঘরানার লোক। ৩৬ বছর ধরে রাজনীতি করছি। বাম আমলেও ভোটে দাঁড়িয়েছি। আমার মেয়েও ভোটে দাঁড়িয়ে পঞ্চায়েতের সদস্য হয়েছে। সেই পরিবারের ছেলে বিজেপি-তে কেন দাঁড়াতে গেল, বুঝে উঠতে পারছি না। তাও আবার আমার বিরুদ্ধে!”
নারায়ণবাবুর দাবি, মনোনয়নের পরে ভাইপো তাঁর কাছে এসে বিজেপি-র টিকিটে দাঁড়ানোয় আপত্তি আছে কিনা, জানতে চেয়েছিলেন। ‘‘আমার আবার আপত্তি কিসের! আমি এমনিতেই জিতব।”—প্রত্যয়ী শোনায় বৃদ্ধের দাবি।
গলসির উদয়নপল্লিতে বাড়ি লাগোয়া হোমিওপ্যাথি ওষুধের দোকান আছে নারায়ণবাবুর। সেখান থেকে একটি বাড়ির পরেই বিজয়ের বাড়ি। বছর তিরিশের বিজয় পেশায় রং মিস্ত্রি। তাঁর কথায় “আমি বিজেপি-মনস্ক। দল প্রার্থী করতে চাইছে জেনে আপত্তি করিনি। কাকার কাছে গিয়েছিলাম। উনি বললেন, ‘যা ভাল মনে হয় করবি’। আমার ভালটাই এখন করছি।”
নারায়ণবাবুর ছেলে স্বরূপ বলেন, “ভাইয়ের (বিজয়) সঙ্গে আমাদের খুবই ভাল সম্পর্ক। এক সঙ্গে ওঠাবসা-খাওয়া দাওয়া। আমরা তো আদতে একটাই একটা পরিবার।’’ তাঁর বক্তব্য, ভোটের ময়দানে কেউ কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বে না। কিন্তু, তা নিয়ে সম্পর্কে তিক্ততা আসতে দেওয়া যাবে না। বিজয়ের মা গায়ত্রীদেবীর কথায়, “রাজনীতির জন্য পরিবারের সম্পর্কে বাধা আসুক, এটা চাই না।” হাইকোর্টের রায়ের পরে পঞ্চায়েত ভোটে নির্ঘণ্ট এখনও তৈরি হয়নি। তা বলে কাকা-ভাইপো প্রচারে পিছিয়ে নেই। কাকার প্রচারে উঠে আসছে গ্রামের উন্নয়নের কথা। গলসিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র করার দাবি। ভাইপো সে সব নস্যাৎ করে অনুন্নয়ন আর সন্ত্রাসের কথা বলছেন।
লড়াইটা জমে গিয়েছে।