উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের ৫৭ আসনে তৃণমূলের ১১৯ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৮১ আসনে তৃণমূলের মনোনয়ন ১৩২টি। জলপাইগুড়ির ১৯ আসনের জন্য ২৮ টি, পূর্ব মেদিনীপুরে ৬০ টি আসনে ৭৯টি, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫১ আসনে ৫৫ টি মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফেই।
আসনের তুলনায় দলের তরফে জমা পড়া এইধরনের অতিরিক্ত মনোনয়নই এখন মাথাব্যথা তৃণমূলের। শেষপর্যন্ত অতিরিক্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে না পারলে বহু আসনে দলের গোঁজ প্রাথীর সঙ্গেও লড়তে হবে তৃণমূলকে। তাই সোমবার মনোনয়নপর্ব শেষ হতেই দলের এই অতিরিক্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে তৎপরতা শুরু করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে প্রত্যাশীরা অনেকেই মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু দলের প্রতীক যাঁরা জমা দেবেন, তাঁরাই তৃণমূলের প্রার্থী। অন্যরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।’’ দলীয় সূত্রে খবর, প্রয়োজনে এইধরনের পরিস্থিতি এড়াতে দলের রাজ্য নেতারাও আলাদা করে কথা বলবেন। প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত ছবিটা বদলে যাবে বলেই আশা করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে এবার ৫০ শতাংশ মহিলা প্রার্থী দিতে হয়েছে। তাঁদের বেশিরভাগই প্রথমবার প্রার্থী হওয়ায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়েও কিছুটা সংশয় রয়েছে।
এই নিয়মেই দলের লড়াই সর্বত্র গোঁজ মুক্ত হবে এমন দাবি করতে পারছেন না তাঁরা। তবে প্রতীক বিলির ক্ষেত্রে জেলা কমিটির সুপারিশ এবং আগের বিজয়ীদের অগ্রাধিকার দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রতীক বিলির ভারপ্রাপ্ত নেতা শুভাশিস চক্রবর্তী অবশ্য এদিন বলেন, ‘‘কথাবার্তা বলেছি। জেলা পরিষদে অতিরিক্ত প্রাথী থাকবে না।’’ উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য বলেন, জেলা পরিষদস্তরে এই সমস্যা থাকবে না। দু’একটি আসনে থাকলেও তা মিটে যাবে।’’ তবে পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে বহু জায়গায় এই লড়াই অনিবার্যই ধরে নিয়েছেন দলের নেতারা। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপেও উত্তর ২৪ পরগনার খড়দায় আসন নিয়ে এই বিরোধ মেটেনি। এখানে গত নির্বাচনে বিজয়ী ২৩ সদস্যকে বাদ দেওয়া নিয়ে স্থানীয়স্তরে দীর্ঘদিন টানাপড়েন চলে। তারপর তা পৌঁছয় শীর্ষনেতৃত্বের কাছে। কিন্তু তাতেও সেই বিবাদ মেটেনি। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের একইরকম লড়াই আছে নদিয়াতেও।
প্রত্যাহারের দিন পেরনোর পরে ছবিটা কী দাঁড়ায় আপাতত সবাই সেই দিকে তাকিয়ে।