প্রতীকী ছবি।।
লাগাতার কর্মবিরতি তো চলছেই। তার জেরে নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল বেধে গেল আইনজীবীদের। অগত্যা এজলাস ছেড়ে মঙ্গলবার নিজের চেম্বারে বসে পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা শুনলেন বিচারপতি।
যথেষ্ট সংখ্যায় বিচারপতি নিয়োগের দাবিতে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন কলকাতা হাইকোর্টের কৌঁসুলিরা। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। তার আগেই কোনও কোনও কৌঁসুলি কেন মামলার শুনানিতে যোগ দিচ্ছেন, তা নিয়ে এ দিন দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বচসা বাধে। বিজেপির তরফে দায়ের করা মামলার আইনজীবী দেবাশিস সাহাকে প্রায় চ্যাংদোলা করে এজলাসের বাইরে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেটা জানতে পেরে নিজের চেম্বারে মামলা শোনেন বিচারপতি। স্থগিতাদেশ দেন।
দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘কর্মবিরতির মধ্যে কেন আমি মামলা করেছি, ওঁরা সেই প্রশ্ন তোলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মামলা চালাতে দিতে হবে বলে আমি দাবি জানাই। ওঁরা তাতে কান না-দিয়ে আমাকে বার করে দেন।’’
ওই আইনজীবী জানান, সকালে ১২ নম্বর কোর্টে হাজির হয়ে তিনি মামলাটির বিষয়ে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁকে দ্বিতীয় অধ্যায়ে আসতে বলেন বিচারপতি। সেই অনুসারে সওয়া ১টা নাগাদ ফের ১২ নম্বর কোর্টে হাজির হন বিজেপির ওই আইনজীবী। দেবাশিসবাবু জানান, ৮-১০ জন আইনজীবী এসে জানতে চান, কর্মবিরতির মধ্যে তিনি মামলার কাজ করছেন কেন? তিনি তাঁদের জানান, মামলার কাজ করতে কাউকে বারণ করা হয়নি। তাই তিনি কাজ করছেন। কর্মবিরতির সমর্থক আইনজীবীরা তাঁকে জানান, ১৯ এপ্রিলের আগে কোনও মামলা করা যাবে না। কিন্তু দেবাশিসবাবু তাতে রাজি হননি। তখন ৮-১০ জন আইনজীবী প্রায় চ্যাংদোলা করে তাঁকে এজলাসের বাইরে নিয়ে যান। এই অভিযোগ মানতে চাননি ওই আইনজীবীরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন রাতুল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘উনি কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন। সেই জন্য আমরা ওঁকে এজলাসের বাইরে যেতে অনুরোধ করেছিলাম। কেউ ওঁকে ধাক্কাধাক্কি করে বাইরে নিয়ে আসেননি।’’ হাইকোর্ট সূত্রের খবর, দেবাশিসবাবু পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।
আইনজীবীদের মধ্যে গন্ডগোলের খবর পেয়ে নিজের চেম্বারে বসে মামলা শোনার সিদ্ধান্ত নেন বিচারপতি তালুকদার। খবর পাঠান কোর্ট অফিসারদের মাধ্যমে। নিজের চেম্বারে বসে মামলা শুনে রাজ্য নির্বাচনের কমিশনের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি।