সবাই দেখেছেন কী ভাবে বাংলায় খুন করা হল গণতন্ত্রকে: পঞ্চায়েত নিয়ে হঠাৎ চড়া আক্রমণে মোদী

বিজেপি সদর দফতরে সভার আয়োজন হয়েছিল কর্নাটকের জয় উদযাপনের জন্য, কর্নাটকের জনতাকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য। সেই ভাষণেই বাংলার প্রসঙ্গ টেনে আনলেন মোদী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ২০:৪০
Share:

পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা নিয়ে সরব নরেন্দ্র মোদী।—ফাইল চিত্র।

কর্নাটক জিতেই নজর বাংলায়। ভোট ঘিরে যে প্রবল হিংসা দেখা গিয়েছে বাংলা জুড়ে, মঙ্গলবার তার তীব্র নিন্দায় সরব হলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

এ দিন সন্ধ্যায় বিজেপি সদর দফতরে সভার আয়োজন হয়েছিল কর্নাটকের জয় উদ্‌যাপনের জন্য, কর্নাটকের জনতাকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য। সেই ভাষণেই বাংলার প্রসঙ্গ টেনে আনলেন মোদী। বাংলায় ‘গণতন্ত্রকে হত্যা করে ফেলা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করলেন। ‘গণতন্ত্রের উপরে এই ভয়ঙ্কর আঘাতের’ বিরুদ্ধে নিজের নিজের ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানালেন সব রাজনৈতিক দলকে, বাংলার সুশীল সমাজকে, বিচারবিভাগকেও।

মোদী বলেন, ‘‘কাল সবাই টিভিতে দেখেছেন, পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী ভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে ভোটদান পর্যন্ত, কোথাও গণতন্ত্রের স্বীকৃতি নেই।’’ এতেই থামেননি প্রধানমন্ত্রী। বিরোধী দলগুলিকে প্রার্থী দিতে না দেওয়া, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিপুল আসন জিতে যাওয়া, ভোটের দিন রাজ্যের নানা প্রান্তে প্রবল হিংসার ছবি ধরা পড়া— সব কিছু নিয়েই মুখ খোলেন তিনি। বিপুল সংখ্যায় নির্দোষ রাজনৈতিক কর্মীদের খুন হতে হয়েছে, শাসক দল ছাড়া অন্য সব দলকে আক্রান্ত হতে হয়েছে— মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর।

Advertisement

‘‘গণতন্ত্রে বিরুদ্ধে যা হল, তা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। পিছনে ফেলে আসা পুরো শতাব্দীটা দেখে নিন, প্রতিটা মোড়ে দেশকে পথ দেখানোর কাজ বাংলার মাটি থেকে হয়েছে। বাংলা বললেই গর্বের অনুভূতি হয়। এমন মহান মানুষদের মাটিকে রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য রক্তাক্ত করে দেওয়া হল।’’ এমনই চড়া ভাষায় এ দিন আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলায় যে অবস্থা চলছে, অবিলম্বে তার প্রতিকারের ডাক দিয়েছেন মোদী। তিনি বলেছেন, ‘‘গণতন্ত্রের বুকে যে ভাবে আঘাত করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক দলকে, সুশীল সমাজকে, দেশের বিচারবিভাগকে নিজের নিজের ভূমিকা পালন করতে হবে বলে আমি মনে করি।’’

কর্নাটক বিজয় উদযাপনের মঞ্চ থেকে বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীর সরব হওয়াকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বাংলা গণতন্ত্রকে হত্যা করে ফেলা হয়েছে বলে বার বার যে মন্তব্য এ দিন করেছেন মোদী, ততটা কঠোর ভাষায় বাংলার শাসক দলকে আক্রমণ করতে আগে কখনও দেখা যায়নি তাঁকে।

আরও পড়ুন: ‘ব্যালট দিন, ছাপ্পা মারব’, হুমকি দিয়ে ধাক্কা প্রিসাইডিং অফিসারকে

আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত, নিহত আরও ৪

স্বাভাবিক ভাবেই নরেন্দ্র মোদীর এই আক্রমণের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘গণতন্ত্র ধ্বংসের কথা বিজেপির মুখে মানায় না। এ দেশে গণতন্ত্রকে কেউ সবচেয়ে বেশি হত্যা করে থাকলে, তার নাম বিজেপি। আজকে উনি কর্নাটকের ফলাফল দেখে হতাশ। সেই হতাশার দিক থেকে মুখ ফেরাতেই পশ্চিমবঙ্গের দিকে আঙুল তুলছেন।’’ পার্থ আরও বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র সুরক্ষিত। এখানে জাতপাত-সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি হয় না এবং এই গণতন্ত্রকে হত্যা করার চেষ্টা করছে বিজেপি। উনি বরং নিজের দলের কর্মীদের সতর্ক করুন।’’ পার্থর কথায়, ‘‘এ রাজ্যে গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে যাঁরা সবচেয়ে বেশি কাজ করছেন, তাঁরা হলেন তৃণমূল কর্মীরা। সেই কারণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে তৃণমূল কর্মীদেরই। মোদীজি সবটা জেনে নিয়ে বললে ভাল করতেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন