এক সময়ে তাঁর ‘রবিনহুড’ ভাবমূর্তি ছিল। এখন ব্যবসায়ী। কেউ বলেন, তিনি গরিবের বন্ধুও।
সেই সেলিম লস্করকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট-২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী করে ‘এক ঢিলে তিন পাখি’ মারল শাসকদল। ইতিমধ্যেই ওই আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছেন সেলিম। সেই সেলিম, নব্বইয়ের দশকে যে ‘বাহুবলী’র বাহিনীর একের পর এক খুন-ডাকাতির ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছিল জেলা পুলিশ। তিনি তখন থেকেই ‘রবিনহুড’।
পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই সময়ে কারও মেয়ের বিয়ে থেকে চিকিৎসা— খরচ জোগাতেন সেলিম। নানা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর জেল খেটে বছর কুড়ি আগে ফিরে আসেন মামুদপুরে, নিজের বাড়িতে। অপরাধ জগৎ ছেড়ে শুরু করেন ঠিকাদারি ও জমির ব্যবসা। তার পর থেকে শাসক ও বিরোধী— দু’পক্ষই তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চললেও এত দিন তিনি সরাসরি রাজনীতির জুতোয় পা গলাননি।
রাজনৈতিক শিবিরের দাবি, এ বার চল্লিশোর্ধ্ব সেলিমকে প্রার্থী করে তাঁর অনুগতদের ভোট পকেটে পুরল শাসক শিবির। একই সঙ্গে এ বার সেলিমকে তারা দক্ষ সংগঠক হিসেবে কাজে লাগাবে। এতে বিরোধীদের কাছ থেকেও তাঁকে দূরে সরানো হল।
জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘ওখানকার দলীয় কর্মীরা সেলিমকে প্রার্থী করার জন্য দরবার করছিলেন। কারণ, এলাকার গরিব মানুষের মধ্যে তাঁর প্রভাব রয়েছে। শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পরই তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেলিমের বিরুদ্ধে এখন আর তেমন মামলা নেই।’’ আর সেলিম বলছেন, ‘‘স্থানীয় মানুষ এবং শাসকদলের নেতারা অনুরোধ করায় ভোটে দাঁড়ালাম। আমি গরিব মানুষদের উপকারেই কাজ করব।’’
মগরাহাটে কান পাতলেই অবশ্য শোনা যায়, বাম জমানায় বহু নেতা-মন্ত্রী কী ভাবে সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। পালাবাদলের পরে সেই কাজটাই এখন তৃণমূল নেতারা করছেন বলে স্থানীয়দের দাবি।