State News

হোয়াটস্অ্যাপে করা মনোনয়নও গ্রহণযোগ্য, ভাঙড় নিয়ে বেনজির রায় হাইকোর্টের

ভাঙড় জমি রক্ষা কমিটির তরফ থেকে যাঁরা প্রার্থী হতে ইচ্ছুক, তাঁরা যাতে মনোনয়ন জমা করতে পারেন, সোমবার বিকেলেই তা কমিশনকে নিশ্চিত করতে বলেছিল হাইকোর্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৯:২৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

হোয়াটস্অ্যাপে জমা দেওয়া মনোনয়নকে মান্যতা দিয়ে মঙ্গলবার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল কলকাতা হাইকোর্ট।কমিশন সেই মনো‌নয়নকে স্বীকৃতি না দিলে আদালত নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে বলে জানান বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। আদালতের এই সিদ্ধান্তে উৎসাহী বিরোধীরা।তাঁরাও রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রশ্ন তুলে অনলাইনেই মনোনয়ন জমা দেওয়ার দাবি তুলেছেন। আদালতের এই রায়কে ভবিষ্যতে হাতিয়ার করা হবে, এমনই ইঙ্গিত বিরোধীদের।

Advertisement

ভাঙড় জমি রক্ষা কমিটির তরফ থেকে যাঁরা প্রার্থী হতে ইচ্ছুক, তাঁরা যাতে মনোনয়ন জমা করতে পারেন, সোমবার বিকেলেই তা কমিশনকে নিশ্চিত করতে বলেছিল হাইকোর্ট। কিন্তু সেই নির্দেশ সত্ত্বেও আলিপুর জেলা শাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দিতে ব্যর্থ হন কমিটির প্রার্থীরা। অভিযোগ, শাসক দলের কর্মীরা তাঁদের বাধা দেন, আটকে রাখেন এবং মনোনয়নের সমস্ত নথি ছিঁড়ে ফেলা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে আলিপুর থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়।

মঙ্গলবার সকালে, বিচারপতি সুব্রত তালুকদার রিপোর্ট চাইলে, কমিটির তরফ থেকে গোটা বিষয়টি আদালতে জানানো হয় আদালতকে। জমি কমিটির নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরী বিচারপতিকে জানান, আদালত রায় ঘোষণার আগেই তাঁদের ৯ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র ভাঙ্গড় ২ ব্লকের বিডিও-কে হোয়াটস্অ্যাপ করে পাঠিয়েছেন এব‌ং তিনি প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন। শর্মিষ্ঠার কথায়“আমরা আদালতকে বিষয়টি জানাই কারণ আমাদের আশঙ্কা ছিল কমিশন ওই মনোনয়ন যে কোনও অজুহাতে বাতিল করে দেবে।”

Advertisement

বিচারপতি এই তথ্য জানার পরই কমিশনের উদ্দেশে বলেন, “এই ৯ জন সোমবার তাঁদের মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এই ৯ জনেরই মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করতে হবে। এঁরা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতে হবে।” বিচারপতি কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই নির্দেশের অন্যথা হলে কমিশন পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েত এলাকার নির্বাচন বন্ধ রাখতে বাধ্য হবে।”

হাইকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “প্রথম থেকেই আমরা বারবার কমিশনে আর্জি জানিয়েছিলাম, অনলাইনে মনোনয়ন পত্র জমা নিতে। কিন্তু কমিশন কোনওভাবেই রাজি হয়নি। আদালতের এই রায় খালি ভাঙড়ের জন্য সীমাবদ্ধ না রেখে সবার জন্য কার্যকর করা উচিৎ। আমরা ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার মনোনয়নপত্র, যা প্রার্থীরা জমা দিতে পারেননি, ই-মেল করেছি কমিশনকে।”

দিলীপের সঙ্গে সহমত কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র। তিনিও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে অনলাইনে মনোনয়ন পেশের দাবি তোলেন। আদালতের এই নির্দেশ আপাতত ভাঙড়ের প্রার্থীদের জন্য হলেও, এই রায় যে বিরোধীদের অক্সিজেন জোগাবে এবং পরবর্তীতে এই রায়কে যে বিরোধীরা হাতিয়ার করবে তার ইঙ্গিত দেন ওমপ্রকাশ।

অন্য দিকে সোমবার কমিশনের বিরুদ্ধে বিজেপি ও কংগ্রেসের করা মামলা খারিজ করে দেন বিচারপতি। অভিযোগ ছিল, কমিশন তাঁদের সঙ্গে কথা না বলেই মনোনয়নের তারিখ সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু আদালত তার অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, এই মুহুর্তে আদালত নির্বাচনী প্রক্রিয়াতে হস্তক্ষেপ করবে না। মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনও বাড়ানোর নির্দেশ দেবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন