প্রতীকী ছবি।
ভোটের দু’দিন আগে শাসকদলের নেতা-কর্মীরাই ঘরছাড়া। যাঁরা আছেন, তাঁরাও ভয়ে কার্যত ঘরবন্দি। ঘটনাস্থল লালগড়ের চন্দ্রপুর গ্রাম।
তৃণমূলের অভিযোগ, বহিরাগত দুষ্কৃতীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সন্ত্রাস করছে বিজেপি। তাই এই অবস্থা। যদিও বিজেপির দাবি, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়াতেই এলাকায় থাকতে ভয় পাচ্ছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা সন্ত্রাসের অভিযোগও করছেন বিজেপি নেতারা। ঝাড়গ্রামের জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, “দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”
গত ৮ মে লালগড়ের বেলাটিকরি গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্দ্রপুর গ্রামে বিজেপির সভা ছিল। সে দিন বিজেপি প্রার্থী ধনঞ্জয় রানার বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই রাতেই তৃণমূলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বাড়িতে বিজেপি পাল্টা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার পর থেকেই ঘরছাড়া লালগড় পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী তৃণমূল সদস্য বেবিতা বেজ, তাঁর স্বামী স্বপন বেজ, তৃণমূলের চন্দ্রপুর বুথ সভাপতি নেপাল গরাই, দলীয় কর্মী গৌরাঙ্গ পাত্র-সহ তৃণমূলের জনা আটেক নেতা-কর্মী।
শনিবার চন্দ্রপুরে গিয়ে দেখা গেল গোটা গ্রাম বিজেপির পতাকায় ছয়লাপ। বেবিতাদেবীর ভাসুর অজিত বেজ বললেন, “ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী সপরিবার এলাকাছাড়া হয়ে গিয়েছে। আমি দিনে এসে একবার ঘরদোর দেখে যাচ্ছি। রাতে থাকার ঝুঁকি নিচ্ছি না।” ঘরছাড়া হয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের চন্দ্রপুর বুথ সভাপতি নেপাল গরাইও। তাঁর স্ত্রী ঝর্নাদেবী বললেন, “খুব ভয়ে ভয়ে আছি।” তৃণমূলের স্থানীয় প্রার্থী জগন্নাথ দাসকে অবশ্য বাড়িতে পাওয়া গেল। তবে তাঁর গলাতেও আতঙ্ক। বললেন, “কয়েক দিন আগে বাড়িতে ফিরেছি। তবে প্রচারে বেরোইনি। কর্মীরা ভীষণই আতঙ্কিত।”
কর্মীদের আতঙ্ক কাটাতে শনিবার প্রচারের শেষ দিনে একটি গাড়িতে মাইক বেঁধে এলাকায় এসেছিলেন তৃণমূলের লালগড় ব্লক সভাপতি বনবিহারী রায়। এলাকাবাসীকে ভয় না পেয়ে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান তিনি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও বলেন, “বিজেপির হামলায় আমাদের আট জন নেতা-কর্মী ঘরছাড়া হয়েছেন। ছ’জনের বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। কর্মীদের শান্ত থেকে ভোটটা সুষ্ঠু ভাবে করতে বলেছি।”
বিজেপির বিনপুর মণ্ডলের সভাপতি জয়দেব মাহাতোর বক্তব্য, “আমাদের সভার দিন তৃণমূলের লোকেরাই ঝামেলা করেছিল। তখন গ্রামবাসী প্রতিরোধ করেন। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়াতেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে গিয়েছেন।”