(বাঁ দিকে) ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহ, ভাটপাড়ার বর্তমান বিজেপি বিধায়ক অর্জুন-পুত্র পবন সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বিধায়ক তহবিল থেকে সরকারি হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন কিনে দেওয়া সত্ত্বেও তা ব্যবহার করা হচ্ছে না। এমনটাই অভিযোগ করলেন ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পবন সিংহ। শাসকদল তৃণমূলকে নিশানা করে সরকারি হাসপাতাল নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ এনেছেন তিনি। ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহের পুত্র বর্তমানে ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক। স্বল্পভাষী এই যুবা রাজনীতির ময়দানে থাকলেও বিতর্ক থেকে শতহস্ত দূরে থাকেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তিনি অভিযোগ করেছেন, দেড় বছর আগে নিজের বিধায়ক তহবিল থেকে ১৬ লক্ষ টাকা ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে একটি এক্স-রে মেশিন কিনে দেন। দেড় বছর পরেও তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করছেন না বলে অভিযোগ। তাঁর আরও অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে বলা হয়েছে, জায়গার অপ্রতুলতার কারণে ওই এক্স-রে মেশিনটি কাজে লাগানো যায়নি।
পবন বলেছেন, ‘‘আমি আমার বিধায়ক তহবিল থেকে প্রায় ২৯ লাখ টাকা ব্যয় করে একটি ইউএসজি মেশিন এবং একটি এক্স-রে মেশিন স্টেট জেনারেল হাসপাতালকে কিনে দিয়েছিলাম। আমাকে হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছিল, আপনি উদ্বোধন না করলেই দু’টি মেশিন আমরা এখনই চালু করে দিতে পারব। যেহেতু আমি বিজেপির বিধায়ক তাই আমাকে উদ্বোধন করতে দেওয়া যাবে না। আমি সেই শর্তেও রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু ইউএসজি মেশিনটি চালু করা হলেও, এক্স-রে মেশিনটি চালু করা হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই এলাকার মানুষকে টাকা খরচ করে এক্স-রে পরিষেবা নিতে হচ্ছে।’’
বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ খণ্ডন করে জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেছেন, ‘‘বিজেপি বিধায়ক অসত্য কথা বলছেন। আমরা বিধায়কেরা কোনও আবেদন পেলেই তবে সেখানে অর্থ বরাদ্দ করি। কোন আবেদনের ভিত্তিতে তিনি এই এক্স-রে মেশিনটি কিনে দিয়েছিলেন তা এখনও অজানা। ওঁর উচিত ছিল আগে বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো। তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে ওই এক্স-রে মেশিনটি কিনে দিয়েছিলেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘একটি এক্স-রে মেশিন বসাতে গেলে তার পরিকাঠামো তৈরি করা দরকার। যেমন একটি বাতানুকূল ঘর তৈরি করতে হবে, তেমনই সেই ঘরটি ড্যাম্প প্রুফ হয় সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন বসানোর জন্য কোনও ঘর নেই। আগে উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করে তবেই ওই এক্স-রে মেশিনটি চালু করা যাবে। তাই অভিযোগ করলেই হল না, আগে পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝতে হবে।’’
যদিও বিজেপি বিধায়ক পবন জানিয়েছেন, যাতে মেশিনটি দ্রুত ওই সরকারি হাসপাতালে বসানো যায় সেই বিষয়ে তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি পাঠিয়েছেন। ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার নিজারুল ইসলাম বলেন, ‘‘জরুরি ভিত্তিতে আমরা স্বাস্থ্য ভবনে বিষয়টি লিখিত আকারে পাঠিয়েছিলাম। সরকারের তরফে পরিষেবা চালু করার বিষয় অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। পূর্ত দফতর এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে, দ্রুত কাজটি সম্পন্ন হয়ে গেলে মানুষ পরিষেবা পাবেন।’’