বিমল গুরুঙ্গ
গ্রেফতারি এড়াতে তিনি লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তার ফলে পাহাড়ে দ্রুত তাঁর শূন্যস্থান দখল করে নিচ্ছেন বিনয় তামাঙ্গ। এই অবস্থায় প্রকাশ্যে আসার কথা ঘোষণা করলেন বিমল গুরুঙ্গ। এক অডিও বার্তায় তিনি জানালেন, আগামী ৩০ অক্টোবর পাহাড়ের জনতার মাঝে ফিরবেন তিনি।
একই বার্তায় গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘জনতা আমাকে চাইছে। লক্ষ লক্ষ পাহাড়বাসীর মধ্যে দিয়েই আমি ফিরব। মরলে জনতার মাঝে মরব। তবুও ইমান বিক্রি করতে পারব না।’’
হঠাৎ এ ভাবে প্রকাশ্যে আসার কথা কেন ঘোষণা করলেন গুরুঙ্গ? পাহাড়ের অনেকেই মনে করছেন, বিনয়ের ক্ষমতা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে বিমলের পক্ষে পাহাড় থেকে দূরে সরে থাকা সম্ভব নয়। এর মধ্যেই দার্জিলিং, কার্শিয়াং পুরসভা বিনয়ের দিকে চলে এসেছে। কালিম্পংও কয়েক দিনের মধ্যে চলে আসতে পারে। এমনকী, যে বিজেপি এত দিন তাঁর সহায় ছিল, তারাও সুর বদলাতে শুরু করেছে। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে কমিটি গড়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ রাজ্য বিজেপির নেতাদের স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এমন বৈঠকে বিনয়কে না ডেকে উপায় নেই। সে ক্ষেত্রে দলকেও বিনয়ের প্রতি সুর নরম করতে হবে। কার্যক্ষেত্রে হয়েছেও তাই। রাজ্যের দায়িত্বে থাকা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ‘‘বিনয় বৈঠকে যোগ দিলে আমাদের আপত্তি কীসের?’’
আরও পড়ুন:উদ্বেগের কিছুই নেই, ডেঙ্গি নিয়ে ভুল প্রচার, মত মমতার
এই অবস্থায় লুকিয়ে বসে থাকা সম্ভব নয় গুরুঙ্গের পক্ষে, বলছেন তাঁর একসময়ের অনুগামীরাই। বিনয়ও আবার প্রাক্তন নেতাকে এই নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘যাঁরা দেশের সংবিধান, আইনকে সম্মান করেন, মর্যাদা দেন, তাঁরা কখনও পালিয়ে বেড়ান না।’’ তার আগে অবশ্য দু’জনের মধ্যে এক দফা তরজা হয়ে গিয়েছে। কী ভাবে?
বুধবারই বিনয় অভিযোগ করেন, তাঁকে চার বার খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই অভিযোগে তিনি কৌশলে বিমলের নাম জড়িয়ে দেন। তার জবাবে এ দিন অডিও-বার্তায় গুরুঙ্গ। বলেছেন, ‘‘এ সব মিথ্যা অভিযোগ। প্রমাণ থাকলে দেখান বিনয়। না হলে আমি মানহানির মামলা করব।’’ পাল্টা জবাবে বিনয় বলেন, ‘‘কাকে দিয়ে, লোক লাগিয়ে কী ভাবে মারার ছক কষা হয়েছিল, সব আমার হাতের কাছে মজুত আছে। প্রয়োজনে সর্বোচ্চ আদালতে সব জানাব।’’
একই সঙ্গে গুরুঙ্গকে আত্মসমর্পণের পরামর্শ দিয়ে বিনয় বলেন, ‘‘জনতা কাকে চাইছে, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। পুজোর মরসুম চুকলে পাহাড়ে এবং সমতল লাগোয়া এলাকায় সভা করে দলের সাত নেতাক কীর্তি জানাব।’’
বিনয়ের এই প্রচার সামলাতে প্রকাশ্যে আসা ছাড়া উপায় নেই গুরুঙ্গের, বলছেন তাঁর একসময়ের অনুগামীরাই।