এর মধ্যেই তাঁকে জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের মাথায় বসিয়েছে রাজ্য সরকার। মোর্চার অন্দরের খবর, এ বার দলেও পূর্ণ ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে তৈরি হচ্ছেন বিনয় তামাঙ্গ। শেষ মুহূর্তে অঘটন না ঘটলে ২০ নভেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে মোর্চার নতুন সভাপতি হতে পারেন বিনয়। আর অনীত থাপা হতে পারেন সহ-সভাপতি।
সোমবার দার্জিলিঙে দলীয় বৈঠকের পরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সতীশ পোখরেল বলেন, ‘‘১৯ নভেম্বর দার্জিলিঙে জনসভা হবে। পরদিন কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানেই সাংগঠনিক রদবদলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।’’ তা হলে ওই সভায় ‘ফেরার’ বিমল গুরুঙ্গকে মোর্চা সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করে সেখানে বিনয়কে বসানোর সিদ্ধান্ত কি পাকা? সতীশ জানান, দল চালানোর জন্য সভাপতিকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। আপাতত গুরুঙ্গ সামনে আসতে চাইছেন না বলে যোগ্য কাউকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
গুরুঙ্গ অবশ্য নিয়মিত অডিও-বার্তা দিচ্ছেন। তবে প্রকাশ্যে আসা নিয়ে এখনও কোনও আশা দেখাতে পারেননি তাঁর অনুগামীদের। ফলে পাহাড়ে গুরুঙ্গ-শিবিরে হতাশা বাড়ছে বলে দাবি আলোচনাপন্থীদের। এর মধ্যে জ্যোতিকুমার রাই, নরবুজি লামার মতো কট্টর গুরুঙ্গপন্থীরাও স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিনয় শিবিরে নাম লিখিয়েছেন।
গুরুঙ্গের পক্ষে এখন চট করে প্রকাশ্যে আসা মুশকিল। এলেই গ্রেফতার হতে পারেন তিনি। তবু কেন বিনয় শিবির তাঁকে সভাপতি পদ থেকে সরাতে মরিয়া? দল সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে আপত্তি জানালেও আগামীতে পাহাড় নিয়ে কেন্দ্রকে নিয়ে আলোচনা ডাকতেই হবে। সেখানে পাহাড়ের প্রধান দলের সভাপতি পদাধিকার বলে যেতেই পারেন। এখন আত্মগোপন করে থাকলেও তখন মোর্চা সভাপতি হিসেবে গুরুঙ্গ ডাক পেতেই পারেন। কিন্তু মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি বিনয়কে তাঁর জায়গায় মনোনীত করলে ছবি বদলে যাবে।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে মোট ৫২ জন সদস্য। তার মধ্যে সাত জন এখন জেলে। গুরুঙ্গের সঙ্গে আছেন চার জন। তাঁর স্ত্রী আশা এবং রোশন গিরি অজ্ঞাতবাসে। ফলে গুরুঙ্গকে নিয়ে ১৪-১৫ জন সদস্য এখন গরহাজির। বাকিদের মধ্যে যদি ৩০-৩৫ জনই যদি বিনয়কে বেছে নেন, তা হলে অন্যরা বাধা দিতে পারবেন না বলেই মনে করছেন আলোচনাপন্থীরা।
মোর্চার ভিতরে গুরুঙ্গের সমর্থকরা এখন বিষয়টি শুনে শিবির বদলানো নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন। যদিও বিনয় জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘জিটিএ এবং দলকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। জিটিএ উন্নয়নের কাজে জোর দেবে। দল গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আওয়াজ জোরদার করবে। আগামী ২১ নভেম্বর শিলিগুড়ির সর্বদল বৈঠকেও সেই দাবিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার কথা বলব।’’