Dudhkumar Mondal

নির্দল প্রার্থী হতে চাওয়া বীরভূমের দুধকুমারকে টিকিট বিজেপির, টিকল না শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ

দলের টিকিট পেয়ে খুশি দুধকুমার বলেন, “পাঁচ বার যে দল থেকে জিতেছি, সেই দল আমার প্রাণের দল। একটা সময় বলেছিলাম, দল টিকিট না দিলে নির্দল দাঁড়াব, কিন্তু দল আমাকে টিকিট দিয়েছে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩ ২১:২৫
Share:

বিজেপি নেতা দুধকুমার মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

দলের প্রতীক না পেলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়াবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন। দলীয় প্রতীক পেয়ে অবশ্য দলের উপর কোনও ক্ষোভ পুষে রাখতে চাইলেন না বীরভূমের ‘ডাকাবুকো’ বিজেপি নেতা দুধকুমার মণ্ডল।

Advertisement

প্রার্থী হবেনই, এমনটা পণ করে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন দুধকুমার। তার আগেই অবশ্য আনন্দবাজার অনলাইনকে দুধকুমার বলেছিলেন, ‘আমি প্রার্থী হবই। দল যদি প্রতীক না দেয় তবে নির্দল হয়ে লড়ব।’’ দুধকুমারের এই আগ্রাসী মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আনন্দবাজার অনলাইনকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, ‘‘আমি বিষয়টা এখনই শুনলাম। দলের পক্ষে ভাবনা চিন্তা করে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ তবে দুধকুমার টিকিট পেতে পারেন তেমন কোনও ইঙ্গিত ছিল না। সোমবার অবশ্য দুধকুমারকে বিজেপির পক্ষ থেকে ফর্ম ডি (কোনও স্বীকৃত দলের প্রতীক পেতে এটি লাগে) দেওয়া হয়। দুধকুমার স্থানীয় বিডিও অফিসে গিয়ে তা জমা দিয়ে আসেন। তার পর এক প্রকার স্পষ্ট হয়ে যায় যে, বিজেপির প্রতীক নিয়েই পঞ্চায়েত ভোটে লড়তে চলেছেন দুধকুমার।

দুধকুমারের দলীয় প্রার্থিপদ পাওয়া নিয়ে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর মণ্ডলের সভাপতি সঞ্জয় নন্দী বলেন, “উচ্চ নেতৃত্বের অনুমোদনক্রমেই দুধকুমারদাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে।” এই প্রসঙ্গেই তাঁর সং‌যোজন, “গ্রামের মানুষ চেয়েছেন দুধকুমারদা লড়ুন। তাঁদের আবেগকে সম্মান জানিয়ে দলও চেয়েছে দুধকুমার দলের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করুন।” দলের টিকিট পেয়ে নিজের আনন্দ গোপন করেননি দুধকুমারও। তাঁর কথায়, “পাঁচ বার যে দল থেকে জিতেছি, সেই দল আমার প্রাণের দল। একটা সময় বলেছিলাম, দল টিকিট না দিলে নির্দল দাঁড়াব, কিন্তু দল আমাকে টিকিট দিয়েছে। দলের টিকিট পেয়ে আমি খুবই খুশি।”

Advertisement

বিজেপির সঙ্গে দুধকুমারের সম্পর্কে অবশ্য নানা উত্থানপতন এসেছে। একটা সময়ে আরএসএস প্রচারক থাকা দুধকুমার ১৯৮৮ সালে প্রথম বার বীরভূমের ময়ূরেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হন। ২০১৮ সালেও তিনি পঞ্চায়েতে জিতেছেন। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ময়ূরেশ্বর আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন দুধকুমার। ২০১৬-এ দাঁড়ান রামপুরহাট থেকে। ২০১৯ সালে বীরভূম আসন থেকে লোকসভা নির্বাচনেও প্রার্থী করে বিজেপি। তবে কোনও বারই জিততে পারেননি। যদিও গ্রামের ভোটে তিনি অপ্রতিরোধ্য।

চার বার গ্রাম পঞ্চায়েত এবং এক বার পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী দুধকুমার বেশ কিছু দিন ধরেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। সুকান্ত রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে জেলা ও ব্লকস্তরের কমিটিতে বদল এলে ক্ষোভ প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন তিনি। ফেসবুকে লেখেন, ‘‘ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক এবং কার্যকর্তাগণ, আমাকে যাঁরা ভালবাসেন তাঁরা চুপচাপ বসে যান।’’ এর পরেই তাঁকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয় রাজ্য বিজেপি। সুকান্ত সেই সময়ে বলেছিলেন, ‘‘যত পুরনো নেতাই হোন না কেন, আমাদের নীতিতে ব্যক্তির থেকে সংগঠন বড়। দলবিরোধী কথা বরদাস্ত করা হবে না।’’ দলের টিকিট পেয়ে শো-কজ প্রসঙ্গ আর তুলতে চান না দুধকুমার। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পুরনো কথা তুলতে চাই না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন