saumitra khan

‘…পুনর্নির্বাচিত করুন’, বিষ্ণুপুরে সৌমিত্রর নামে দেওয়াল লিখন প্রায় চূড়ান্ত

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুরও ইঙ্গিত, বিষ্ণুপুরে সৌমিত্র খান-ই টিকিট পাচ্ছেন। সায়ন্তনের কথায়, ‘‘সৌমিত্র খান তাঁর কেন্দ্রেই টিকিট পেতে পারেন।

Advertisement

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:৩৩
Share:

সৌমিত্র খানের ফেসবুক পেজ থেকে ছবিটি নেওয়া হয়েছে।

দেওয়াল লিখনের ভাষাটা কেমন হবে? ‘নির্বাচিত করুন’? নাকি ‘পুনর্নির্বাচিত করুন’? বিষ্ণুপুরের বিজেপি কর্মীদের মধ্যে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল বুধবার থেকে। এলাকার বর্তমান সাংসদ দল বদলেছেন বুধবার। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুরে বিজেপির প্রার্থী কি তা হলে তিনিই? জল্পনা চলছিল। সংসদের দলবদলের পরে ২৪ ঘণ্টা কাটতেই বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন, বিষ্ণুপুরে পদ্মফুল প্রতীক এ বার সৌমিত্ররই।

Advertisement

২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে হাত চিহ্নের প্রার্থী হিসেবে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন সৌমিত্র খান। কিন্তু বিধায়ক হিসেবে মেয়াদ পূর্ণ করেননি তিনি। প্রথমে দল বদলে তৃণমূলে যান। তার পরে ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর আসন থেকে জোড়াফুল প্রতীকে লড়েন এবং জেতেন। এ বারও মেয়াদ ফুরনোর আগেই সৌমিত্র দল বদলে নিলেন।

সাংসদ থাকা অবস্থাতেই সামিল হলেন বিজেপি-তে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর আসনে পদ্ম প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে সৌমিত্র খানের নাম ঘোষিত হওয়া যে সময়ের অপেক্ষা, তা বিজেপির অন্দরে কান পাতলে এখন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি কংগ্রেসে রদবদল, প্রদেশ সভাপতি পদে ফিরলেন শীলা দীক্ষিত​

তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সৌমিত্রর দূরত্ব বছরখানেক ধরেই বাড়ছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক হওয়ার পর থেকেই সৌমিত্র খান কোণঠাসা হচ্ছিলেন দলে। মুকুল রায়ের হাত ধরে দলে আসা সৌমিত্র যে তাঁর খুব একটা পছন্দের পাত্র ছিলেন না, অভিষেক সে ইঙ্গিত বুধবারও দিয়েছেন নিজের এক মন্তব্যে। তৃণমূল নেতারা এখন বলছেন, সৌমিত্র বেশ কিছু দিন ধরেই বুঝতে পারছিলেন, বিষ্ণুপুর থেকে ফের জোড়াফুলের টিকিট পাওয়া তাঁর পক্ষে বেশ কঠিন। সেই কারণেই তিনি দল বদলেছেন বলে তৃণমূলের দাবি। তবে বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, দল বদলানোর আগে পদ্ম প্রতীকে বিষ্ণুপুর থেকে লড়ার বিষয়ে বিজেপি নেতৃত্বের কাছ থেকে প্রায় পাকা কথা আদায় করে নিয়েছেন সাংসদ।

আরও পড়ুন: ভোটের আগে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য জিএসটিতে ছাড়ের সীমা দ্বিগুণ করল কেন্দ্র

মূলত যাঁর হাত ধরে বিজেপিতে ঢুকলেন সৌমিত্র খান, সেই মুকুল রায় কী বলছেন সৌমিত্রর টিকিট পাওয়ার বি‌ষয়ে? সৌমিত্র-ই যে বিজেপির টিকিট পাচ্ছেন বিষ্ণুপুরে, এমন কথা মুকুল বলছেন না। দিল্লি থেকে ফোনে বৃহস্পতিবার আনন্দবাজারকে তিনি বললেন, ‘‘কে কোথায় প্রার্থী হবেন, তা ঠিক করার আমি কেউ নই। ওই সিদ্ধান্ত দলের সংসদীয় বোর্ড নেবে।’’ তা হলে কি সৌমিত্র খানের ভাগ্যও আপাতত ঝুলে রইল? সংসদীয় বোর্ড সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত বিষ্ণুপুরের বর্তমান সাংসদকে আগামী ভোটে টিকিট পাওয়ার বিষয়ে কি অনিশ্চিত থাকতে হবে? মুকুল রায়ের ইঙ্গিত, সৌমিত্র খানের ক্ষেত্রে ততটা অনিশ্চয়তা নেই। তিনি বললেন, ‘‘সৌমিত্র খান ওই এলাকার বর্তমান সাংসদ। দল নিশ্চয়ই তাঁর বিষয়ে সে ভাবেই ভাববে।’’

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুরও ইঙ্গিত, বিষ্ণুপুরে সৌমিত্র খান-ই টিকিট পাচ্ছেন। সায়ন্তনের কথায়, ‘‘সৌমিত্র খান তাঁর কেন্দ্রেই টিকিট পেতে পারেন। সে সম্ভাবনা যথেষ্টই রয়েছে। তবে বাকিদের কথা এখনই বলতে পারছি না।’’ বাকিরা কারা? সায়ন্তন বললেন, ‘‘আরও অনেকেই তো বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন। তাঁরাও সবাই নিজের নিজের আসনেই টিকিট পাবেন কি না, এখনই বলতে পারছি না। যোগদানগুলো হোক, তার পরে বলতে পারব।’’

বিজেপির প্রার্থী তালিকা এখনও ঘোষিত হয়নি ঠিকই। কিন্তু নেতাদের কথায় স্পষ্ট, বিষ্ণুপুরে নিজের টিকিটের পাকাপোক্ত বন্দোবস্ত করেই সৌমিত্র বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। অর্থাৎ প্রথম বার সংসদে নির্বাচিত হতে চাইছেন, বিজেপির প্রার্থী এমন কেউ হচ্ছেন না। অতএব বিষ্ণুপুরের বিজেপি কর্মীরাও প্রায় নিশ্চিত, দেওয়াল লিখনের ভাষটা কী হবে— ‘আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খান-কে পুনর্নির্বাচিত করুন।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন