অটলে বাম-দ্বিধা, আমন্ত্রিত মমতাও

সরকারি প্রেক্ষাগৃহ মহাজাতি সদনে কাল, বুধবার রাজ্য বিজেপির আয়োজনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্মরণসভা। ওই সভার জন্য বিজেপি নিয়মমাফিক টাকা দিতে চাইলেও ভাড়া নেননি হল কর্তৃপক্ষ। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য আমন্ত্রণপত্র দিয়ে এসেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩৬
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার পরে প্রাথমিক ভাবে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছিলেন, তাঁরা এই ধরনের অনুষ্ঠানে গিয়ে থাকেন। কিন্তু অটলবিহারী বাজপেয়ীর কলকাতার স্মরণসভায় শেষ পর্যন্ত তারা যোগ দেবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়েছে সিপিএম। দিল্লিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্মরণসভায় প্রতিনিধি পাঠিয়েছিল তৃণমূল এবং সিপিএম। তার পরে আর কলকাতায় আলাদা স্মরণসভায় যোগ দেওয়ার অর্থ হয় না বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আলিমুদ্দিনের একাংশেরও একই যুক্তি। তাদের আশঙ্কা, বাংলায় বাজপেয়ীর স্মরণসভা থেকে তৃণমূল দূরে থাকল আর সিপিএম উপস্থিত হল— এমনটা ঘটলে রাম-বামকে ফের একজোট করে দেখানোর সুযোগ পেয়ে যাবে শাসক দল!

Advertisement

সরকারি প্রেক্ষাগৃহ মহাজাতি সদনে কাল, বুধবার রাজ্য বিজেপির আয়োজনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্মরণসভা। ওই সভার জন্য বিজেপি নিয়মমাফিক টাকা দিতে চাইলেও ভাড়া নেননি হল কর্তৃপক্ষ। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য আমন্ত্রণপত্র দিয়ে এসেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তো ননই, তাঁর দলও কলকাতার স্মরণসভায় যাবে না বলে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, বাজপেয়ীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই। শেষকৃত্যেও দলের প্রতিনিধিরা ছিলেন। ছিলেন দিল্লির স্মরণসভাতেও। এর পরে আবার কলকাতার সভায় গিয়ে কী হবে? দলের অন্দরে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের একাংশও একই কথা বলছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি অবশ্য বলেছেন, সব দল আমন্ত্রিত এবং উপস্থিত থাকলে তাঁরাও থাকতে পারেন। দোলাচলের জেরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নিতে পারেনি সিপিএম।

বাজপেয়ীর স্মরণসভার আমন্ত্রণ স্বীকার করে তাঁরা কি যাবেন? এই প্রশ্নের জবাবে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘আমরা সচরাচর রীতি-নীতি, শিষ্টাচার মেনে চলি। বিজেপি নেতা বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী বা তপন শিকদারের স্মরণসভায় আমরা গিয়েছিলাম। তাঁদের রাজনীতি ছিল বাংলাকেন্দ্রিক। বাজপেয়ীর দিল্লির স্মরণসভায় আমাদের প্রতিনিধি ছিলেন। তার পরে কলকাতায় গেলেও হয়, না গেলেও হয়!’’ তেমন হলে নামমাত্র প্রতিনিধি পাঠিয়ে নিয়মরক্ষা করতে পারে সিপিএম।

Advertisement

এরই মধ্যে এ দিন নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার, সদ্যপ্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে, জামাই, পুত্রবধূ ও নাতি। সোমনাথবাবুর পরিবারের তরফে ১ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র সদনে স্মরণসভার আয়োজন করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সেখানেও যাবেন না। সোমনাথ-কন্যা অনুশীলা যদিও বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্মরণসভায় আমন্ত্রণ জানাতে যাইনি।’’ পারিবারিক স্মরণসভায় সিপিএমের ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা অবশ্য ক্ষীণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন