Jalpaiguri

কৃতিত্ব নিতে পথে বিজেপি, রীতি নিয়ে প্রশ্ন

যে ভাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন ও দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ‘ধন্যবাদ’ জানিয়ে মিছিল করল, তাতে হতবাক জলপাইগুড়ির অনেক মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

মেডিক্যাল কলেজের কৃতিত্ব নেবে কে? শনিবার সকাল থেকে যে ভাবে কোমর বেঁধে নামল বিজেপি, যে ভাবে তারা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ‘ধন্যবাদ’ জানিয়ে মিছিল করল, তাতে হতবাক জলপাইগুড়ির অনেক মানুষ। অনেকেই বলছেন, রীতি অনুযায়ী এই অনুমোদন তো কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকেই আসার কথা। তা হলে রীতি মানলে তাকে এই ভাবে ধন্যবাদ দেওয়া হচ্ছে কেন?

Advertisement

‘প্রচার’ অবশ্য ছিল দেখার মতো। শহরের প্রাণকেন্দ্র কদমতলা তো বটেই, আরও বেশ কিছু গলি এবং রাস্তায় বিজেপির পতাকা বাঁধা টোটোয় মাইক লাগিয়ে এই ঘোষণা চলল। বিজেপি সূত্রের খবর, পুর এলাকাতেই মূলত প্রচার চালানো হয়েছে। কেন্দ্র জলপাইগুড়িকে মেডিক্যাল কলেজ দিয়েছে— পুরভোটের আগে এই বার্তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে ঢুকিয়ে দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ মনে করছেন, মেডিক্যাল কলেজের অনুমতি দেওয়ার এক্তিয়ার কেন্দ্রেরই রয়েছে। কিন্তু কাজ তো রাজ্যের মাধ্যমেই হবে। সেক্ষেত্রে রাজ্যকে চিঠি না দিয়ে কেন্দ্রের শাসক দলের রাজ্য সভাপতিকে কেন ওই বিষয় জানিয়ে চিঠি দেওয়া হল সেই প্রশ্ন তুলছেন শহরবাসীর কেউ কেউ।

২০১৭ সালে শহরে সরকারি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়িতে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ঘোষণা করেছিলেন। রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, মেডিক্যাল কলেজের প্রস্তাব তৈরি করে পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রের কাছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারই এত দিন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের ফাইল আটকে রেখেছিল বলে অভিযোগ তৃণমূলের। যদিও তৃণমূলের তরফে এ দিন পথে নেমে কোনও প্রচার চালাতে দেখা যায়নি।

Advertisement

জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী নীতির প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য-শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি আমরা করি না। আমাদের নেত্রী তা পছন্দও করেন না। জলপাইগুড়িতে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হয়েছে, তখনও আমরা মাইক নিয়ে প্রচার চালাইনি। বিজেপি কুরুচির পরিচয় দিয়েছে। শহরবাসী তা বুঝেছেন।” যদিও তৃণমূলের সাধারণ কর্মীদের একাংশের দাবি, বিজেপি যখন অগ্রাসী প্রচার চালাচ্ছে তখন তৃণমূলেরও পাল্টা প্রচার শুরু করা উচিত ছিল। সামনেই পুরভোট তার আগে বিজেপি মেডিক্যাল কলেজের ‘তাস’ খেলে দিয়েছে বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের একাংশের। এই পরিস্থিতিতে দলও মাঠে নামুক চাইছে কর্মীরা। কৃষ্ণ অবশ্য বলেন, “জলপাইগুড়িতে যা উন্নয়ন হচ্ছে সবই তো রাজ্যের। তার সামগ্রিক প্রচার চলছে, চলবেও।”

সূত্রের খবর, একদিন প্রচার চালিয়েই থামছে না বিজেপি। দলের পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী যে চিঠি বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে পাঠিয়েছেন, সেটি ছাপিয়ে শহরের বাড়ি বাড়ি বিলি করা হবে। কেন্দ্রের অনুমোদন পাওয়ার পরে এ বার দ্রুত মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো তৈরির দাবিতে রাজ্যকে চাপে রাখতে আন্দোলন শুরু করবে বিজেপি।

বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “কেন্দ্র জলপাইগুড়িতে নতুন মেডিক্যাল কলেজ উপহার দিয়েছে। এখন দেখার রাজ্য কত দ্রুত কাজ শুরু করে। কাজ শুরু করতে দেরি হওয়া মানে বুঝতে হবে রাজ্য বঞ্চনা করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন