BJP

পঞ্চায়েতের আগে নিচু তলাই চিন্তা বিজেপির

সম্প্রতি কলকাতায় পঞ্চায়েত নিয়ে যে বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠক হয়েছিল, সেখানে রাজ্য বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল বারবার বুথ স্তরে সংগঠন গড়ার দিকেই জোর দিয়েছিলেন।

Advertisement

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২২ ০৭:০২
Share:

চিন্তা বিজেপির। ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েতের আগে রাজ্য বিজেপির মাথাব্যাথা নিচু তলা। তাই ‘নিচু তলা’র অবস্থা দেখতে জেলায় জেলায় ঘুরছেন রাজ্য বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল। কখনও তাঁর সঙ্গী হচ্ছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, কখনও সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কথা থাকলেও এখনও জেলা সফর শুরু করেননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে সূত্রের খবর, এ মাসের মধ্যেই তিনিও জেলা সফর শুরু করবেন।

Advertisement

কিন্তু এখনও সাংগঠনিক কাজ যে গুছিয়ে নেওয়া গিয়েছে, এমনটা দাবি করছেন না বিজেপি নেতারাও। পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বঙ্গ বিজেপির বিশেষ কমিটির আহ্বায়ক দেবশ্রী চৌধুরী বলেন, ‘‘নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজ তো চলবেই। নেতারা জেলায় জেলায় প্রবাস করছেন। সেই রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।’’ পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তাঁর দাবি, “গত বারের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করার চেষ্টা করছি।”

সম্প্রতি কলকাতায় পঞ্চায়েত নিয়ে যে বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠক হয়েছিল, সেখানে বনসল বারবার বুথ স্তরে সংগঠন গড়ার দিকেই জোর দিয়েছিলেন। সেই সূত্র ধরে মোর্চা সম্মেলন থেকে বুথে বুথে কর্মী সম্মেলন করার কথা ঘোষণা করেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত।

Advertisement

বৈঠকে স্থির হয়, নিচু তলার প্রকৃত চিত্র দেখতে শীর্ষ নেতৃত্ব জেলায় জেলায় সাংগঠনিক বৈঠক করবেন। উৎসবের মরসুম শেষ হতেই সেই বৈঠকের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সুকান্ত দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, কোচবিহার, রায়গঞ্জ, মালদা সাংগঠনিক জেলায় বৈঠক করেছেন। সঙ্গে ছিলেন বনসল। দিলীপ ইতিমধ্যে দুই মেদিনীপুরে বৈঠক করেছেন। উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরেই বনগাঁয় গিয়েছেন সুকান্ত। সৌমিত্র খাঁ দুর্গাপুরে, জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো পুরুলিয়ায় বৈঠক করেছেন। বাকি নেতারাও বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছেন।

তবে নেতারা ঘুরলেও নিচু তলায় যে দলের অবস্থা খুব একটা ভাল নয়, সে কথাও বৈঠকে উঠে আসছে। দলের একাধিক নেতা বৈঠকে বলেছেন, নিচু তলায় দল কার্যত শূন্য। সেই জায়গা নিয়ে নিচ্ছে সিপিএম। উপর তলায় বৈঠক করলে আর নিচু তলায় কর্মসূচি না নিলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দাঁত ফোটানো যাবে না। সূত্রের খবর, তার পরেই কৌশলে সৌমিত্রের মতো কিছু নেতা বামেদের ‘জোট বার্তা’ দিতে চাইছেন। দিলীপও বলেছেন, ‘‘কোথায় একটা সমবায় নির্বাচনে কী হয়েছে, উনি (মুখ্যমন্ত্রী) ভয় পেয়েছেন! এখনও তো পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়নি। আগে নির্বাচন ঘোষণা হোক, তার পর দেখা যাবে কী হবে।’’

অবস্থানগত ভাবে বামেদের থেকে ভিন্ন মেরুতে হলেও নিচু তলায় হারানো জমি ফিরে পেতেই যে বিজেপি নেতারা জোটের জল্পনা উস্কে দিচ্ছেন, তা মেনে নিচ্ছে রাজনৈতিক শিবির। দলের অবস্থান স্পষ্ট করলেও এই নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘কিছু জায়গায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে জোট বাঁধে। তবে পশ্চিমবঙ্গে মেরুকরণের রাজনীতির প্রবাহ ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যে খাতে বয়েছে, সেটাই ভবিষ্যৎ। বাংলার মানুষ বিশ্বাস করে, তৃণমূলকে হারাতে পারে বিজেপি। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে থাকে গ্রামের রাজনীতির রসায়নের কারণে। তার উপরে কোনও দলের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন