বিজেপির একটি কর্মসূচিতে বক্তৃতা করছেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বাঁ পায়ের কাছে রাখা রয়েছে রবীন্দ্রনাথের ছবি। ছবি: সংগৃহীত।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছবিতে আগুন দিতে গিয়ে মালদহের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা পুড়িয়ে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি। তা নিয়ে শাসকদলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল। বিশ্বকবির অপমানের বিরুদ্ধে ময়দানে নেমেছিল বিজেপি। এ বার সেই রবীন্দ্রনাথের ছবি নিয়েই পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে নামল তৃণমূল।
বুধবার এক্স হ্যান্ডল থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের একটি কর্মসূচির ছবি পোস্ট করেছে তৃণমূল। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মঞ্চে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বক্তৃতা করছেন সুকান্ত। আর তাঁর পায়ের কাছে রাখা রয়েছে রবীন্দ্রনাথ এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছবি। রবীন্দ্রনাথ-বঙ্কিমের ছবি পোস্ট করে শাসকদলের পক্ষ থেকে লেখা হয়েছে, ‘‘আমরা সবসময় রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্রকে মাথার উপরে রাখি আর বিজেপি রাখে পায়ের নীচে।’’ তৃণমূলের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবেই বাঙালি মনীষীদের অসম্মান করা হয়েছে। পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘এটাই বিজেপির বাংলা-বিরোধী মুখ।’’
শুধু তৃণমূল নয়। দলের একাধিক নেতাও সুকান্তের ওই ছবি নিয়ে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন। সেই তালিকায় যেমন রয়েছেন দলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তেমন রয়েছেন টিএমসিপি নেতা সুদীপ রাহাও। শাসকদল প্রচার শুরু করতেই পাল্টা ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি।
সুকান্ত বলেন, ‘‘তৃণমূল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি পুড়িয়েছে। সেই পাপ ঢাকতে এখন মিথ্যাকে হাতিয়ার করতে চাইছে। যে কর্মসূচির ছবি ওরা দেখাচ্ছে, সেখানে স্টেজের একেবারে সামনের অংশে রবীন্দ্রনাথ এবং বঙ্কিমচন্দ্রের ছবি রাখা ছিল। আমি তার থেকে অনেকটা পিছনে দাঁড়িয়েছিলাম। ছবিটা এমন জায়গা থেকে তুলেছে, যাতে ওই দূরত্ব বোঝা যাচ্ছে না। আমি কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলাম আর ছবি কোথায় ছিল তা ব্যারাকপুরের স্থানীয় মানুষ দেখেছেন। ওখানে যে সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরাও দেখেছেন।’’ সুকান্ত আরও বলেন, ‘‘এই ছবিটাকে ঠিক মতো বুঝতে হলে থ্রি ডায়মেনশনে দেখতে হবে। কুণাল ঘোষ সেটা হয়তো বোঝেন না। পারলে নিজের ছেলেকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, তিনি আইআইটিতে পড়েছেন। তিনি বোঝেন।’’
২০২১ সালের বিধানসভা, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের মতো ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটেও যে তৃণমূল বাঙালি অস্মিতাকে তাদের প্রচারের অভিমুখ করতে চলেছে, তা স্পষ্ট। সেই আবহে মালদহের ছাত্রনেতা এবি সোহেলের কাণ্ডে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল তৃণমূলকে। রবীন্দ্রনাথের ছবি হাতে নিয়ে কলকাতায় মিছিল করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরিস্থিতি বুঝে সোহেলকে বহিষ্কার করে টিএমসিপি। তার পর তাঁকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। সেই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে নামল তৃণমূল। আর পদ্মশিবির বলল ‘পাপ’ ঢাকার চেষ্টা।