BJP

Rajib Banerjee: পদ্ম ছাড়ছেন রাজীব, ছাড়ার দিনের ‘ছবি’ কি শুধুই ছবি, নাকি ফেরার দিনের পাসপোর্ট

দলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে মমতার ছবি হাতে শেষ বার বিধানসভা ছেড়েছিলেন। ভেবেছিলেন বিজেপি বিধায়ক হয়ে ফিরবেন। সে স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২১ ১২:১২
Share:

দলে ছাড়লেও নেত্রীকে ছাড়েননি সেদিন। ফাইল চিত্র

বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসক শিবির সূত্রের খবর, রাজীবের প্রত্যাবর্তন পাকা হয়ে গিয়েছে। ঘটনাচক্রে, ‘রাজীব’ শব্দের অর্থ ‘পদ্ম’। ফলে ‘রাজীব’ নাম নিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ‘পদ্ম’ শিবিরে যোগ দেওয়ায় উৎসাহীরা ভেবেছিলেন, এই গাঁটছড়া দীর্ঘস্থায়ী হবে। যদিও রাজীব নিজে আনন্দবাজার অনলাইনকে এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

কিন্তু ঘটনাপ্রবাহ অন্য দিকে চলে গেল। পদ্মের মায়া কাটিয়ে রাজীব ফিরলেন পুরনো ঘরে। আর তাঁর ফেরার সময়ে ফের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াল তাঁর তৃণমূল ছাড়ার দিনের দৃশ্য।

Advertisement

দলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্রেমে-বাঁধানো ছবি হাতে শেষবার বিধানসভা থেকে বেরিয়েছিলেন রাজীব। ভেবেছিলেন বিজেপি বিধায়ক হয়ে ফেরত আসবেন। কিন্তু সে স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। ভোট পর্ব মেটার পর থেকেই ডোমজুড়ে পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রাজীব ক্রমশ গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব এবং পুরনো দল তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন। অবশেষে তা সম্পূর্ণ হল।

বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার সময় কলকাতায় চাটার্ড বিমান পাঠিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজীবের সঙ্গে সেই বিমানে আরও যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে বিধানসভা ভোটে জিতেছেন শুধু পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। পার্থ নাকি দোলাচলে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, রবিবারই ফিরে যাচ্ছেন রাজীব।

Advertisement

২০১৬ সালে ডোমজুড় থেকে রাজ্যে সর্বোচ্চ ব্যবধানে (এক লক্ষেরও বেশি) ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূলের রাজীব। বিজেপি-র টিকিটে ২০২১ সালে সেই ডোমজুড়েই তিনি হেরেছেন ৪২ হাজারেরও বেশি ভোটে। রাজীব তার পর থেকেই আড়ালে চলে যান। বিজেপি দফতরের আশপাশে তাঁকে আর দেখাই যায়নি। তৃণমূলের কাছাকাছি যেতে কোনও পথই ছাড়েননি রাজীব। এক সময়ে তিনি যাঁর ‘অনুগামী’ বলে নিজের পরিচয় দিতেন সেই শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করে নেটমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। বিজেপি-র নিন্দাও করেছেন সেই সব পোস্টে।

বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, ভোটের পরে রাজীব যত বারই প্রকাশ্যে এসেছেন, সে সবই ছিল তাঁর তৃণমূলে ফেরার উদ্যোগ। কখনও তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বাড়িতে, কখনও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে গিয়েছেন রাজীব। মুকুল রায়ের স্ত্রীবিয়োগের পরে কাঁচড়াপাড়ায় কিংবা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মাতৃবিয়োগের পরে নাকতলায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। সংবাদমাধ্যমকে বারবারই জানিয়েছেন, সব সাক্ষাৎই ‘সৌজন্যমূলক’।

তবে রাজীবের ঘরে ফেরা আটকাতে বিরোধিতাও এসেছিল তৃণমূলের অন্দর থেকে। তাঁর এলাকা ডোমজুড়েই ‘গদ্দারদের আর দলে নয়’ পোস্টার দেখা গিয়েছে। কখনও মুখ খুলেছেন তাঁকে হারানো বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ, কখনও তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শেষ পর্যন্ত দুই কল্যাণের কেউই রাজীবের ‘কল্যাণ’ আটকাতে পারলেন না। এখন প্রশ্ন— তা কি সেই ছবির দৌলতেই? নেত্রীর ছবি হাতে বেরিয়ে যে ছবির জন্ম দিয়েছিলেন রাজীব স্বয়ং।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন