Durga Angan

জগন্নাথধামের পর ‘দুর্গা অঙ্গন’ গড়বেন মমতা, আক্রমণ শানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সংবিধান পড়তে বললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর ‘দুর্গা অঙ্গন’ গড়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জগন্নাথধামের পর মমতার নয়া উদ্যোগ নিয়ে কার্যত বঙ্গ বিজেপির অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৫ ১৪:৫৭
Share:

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

জগন্নাথধামের পরে এ বার বাংলায় ‘দুর্গা অঙ্গন’ গড়বেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে সেই ঘোষণা করে দিয়েছেন তিনি। যদিও তৃণমূলের ‘দুর্গা-প্রীতি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর ‘দুর্গা অঙ্গন’ গড়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীকে সংবিধান পড়ে দেখার পরামর্শ দিলেন তিনি। জগন্নাথধামের পর মমতার নয়া উদ্যোগ নিয়ে কার্যত বঙ্গ বিজেপির কড়া অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘হিন্দুদের কোনও ধর্মীয় মন্দির সরকারি টাকায় হয় না। কোনও ধর্মের মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, চার্চ সরকারের টাকায় গড়তে সংবিধানও অনুমোদন করে না। এ সব সরকারি টাকায় তৈরি করা যায় না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উনি সংবিধান পড়েননি। নিজের ধর্মও পড়েননি। তাই এই ধরনের কথাবার্তা বলছেন। আগে সব পড়ে দেখতে বলুন।’’

তৃণমূল মুখপাত্র ঋজু দত্ত বলেন, ‘‘শুভেন্দু বার বার মমতার অন্ধ বিরোধিতায় তাঁকে বিভিন্ন ভাবে কটাক্ষ করছেন। আমাদের প্রশ্ন, একজন মহিলা, যিনি রাজনীতিতে আসার আগে থেকেই বাড়িতে কালীপুজো করেন, যিনি বাংলায় নারায়ণকে নিয়ে এসে জগন্নাথ রূপে প্রতিষ্ঠা করে জগন্নাথধাম তৈরি করলেন, যিনি দুর্গা মন্দির তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যিনি বাংলার ছোট ছোট দুর্গাপুজোগুলিকে অনুদান দেন, দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর কার্নিভাল করছেন, বিজেপি এবং শুভেন্দুর কাছে তিনি হিন্দু নন? তাঁরা নাকি হিন্দু, যাঁরা নারায়ণকে নিয়ে উপহাস করেন, যাঁরা জগন্নাথধামকে ‘বিনোদন পার্ক’ বলছেন। এ সব যাঁরা করছেন, মানুষ তাঁদের বিচার করবেন।”

Advertisement

দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের সময়েও একই কথা শোনা গিয়েছিল শুভেন্দুর মুখে। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, বিজেপির সঙ্গে ‘হিন্দুত্বের প্রতিযোগিতা’য় কোনও ছাড় দিতে চান না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাই তিনি জগন্নাথ মন্দিরের পর ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরির কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন। পাল্টা শুভেন্দুও দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বলে আক্রমণ শানিয়েছেন। পাশাপাশি ওই মন্দিরকে ‘ধাম’ বলাও যে ধর্মীয় আচারবিরুদ্ধ, তা-ও উল্লেখ করেছেন তিনি। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের মাথায় বাজ পড়েছে বলে শুভেন্দু সম্প্রতি নিজের সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘লক্ষণ ভাল নয়’। তাই বিজেপির একাংশ মনে করছে, মমতার এ-হেন মন্দির তৈরি করে হিন্দুত্বের ভোটব্যাঙ্কে হাত বাড়ানোর কৌশলকে রুখতে চাইছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।

সম্প্রতি দুর্গাপুরের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘জয় মা দুর্গা’, ‘জয় মা কালী’ বলে বক্তৃতা শুরু করেছিলেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২১-এর মঞ্চ থেকে যা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন। তাঁর দাবি, ঠেলায় না-পড়লে বেড়াল গাছে ওঠে না! এর পরে মমতা তাঁর বক্তৃতায় ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরির ঘোষণা করেছেন। বিজেপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা বার বার তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘তোষণে’র রাজনীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন। এমনকি রাজ্যে দুর্গাপুজোর বিসর্জন, সরস্বতীপুজোয় ‘বাধা’ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ তোলা হয় কোনও কোনও মহল থেকে। পদ্মশিবিরের দাবি, তাদের আক্রমণ থেকে বাঁচতেই কখনও জগন্নাথ, কখনও দুর্গার আশ্রয় নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement