Suvendu Adhikari

শুরু পূর্ব বর্ধমানে, জেলায় জেলায় শুভেন্দু-সফরে গাইড দিলীপ

নিজেকে ‘গাইড’ আখ্যা দিতে চাইছেন না দিলীপ। তাঁর কথায়, ‘‘গাইড করার কিছু নেই। শুভেন্দু পুরোদস্তুর রাজনীতির মানুষ।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৩:৪৯
Share:

শুভেন্দু ও দিলীপ— ফাইল চিত্র

শনিবার দুপুরে ২টোয় মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন তৃণমূল ছেড়ে-আসা শুভেন্দু অধিকারী। তার ৭২ ঘণ্টার মাথায় মঙ্গলবার বেলা ৩টেয় শুভেন্দুর প্রথম জনসভা পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে। সঙ্গে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, এই শুরু। এর পর জেলায় জেলায় সফর চলবে শুভেন্দুর। সঙ্গে থাকবেন দিলীপ। ‘নবাগত’-কে বিজেপি-র আদবকায়দায় অভ্যস্ত করতে আপাতত শুভেন্দুর গাইডের কাজ করবেন দিলীপ। তবে নিজেকে ‘গাইড’ আখ্যা দিতে চাইছেন না দিলীপ। তাঁর কথায়, ‘‘গাইড করার কিছু নেই। শুভেন্দু পুরোদস্তুর রাজনীতির মানুষ। প্রথম দিকের কয়েকটা সমাবেশে আমি বা অন্য নেতারা সঙ্গে থাকলেও এর পরে শুভেন্দু একাই বিভিন্ন জেলায় সফর করবেন।’’

Advertisement

শুভেন্দুকে যে বিজেপি যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে, সেটা যোগদান কর্মসূচি থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে। মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় ফেরার সময় অমিত শাহ নিজের চপারে তুলে নিয়েছিলেন তাঁকে। যোগ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শুভেন্দুকে দলের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন অমিত। যেটা বিজেপি-র ক্ষেত্রে সাম্প্রতিককালে নজিরবিহীন বলেই দলের একাংশের দাবি। রাজারহাটের একটি হোটেলে নির্বাচনী কৌশল নিয়ে সেই বৈঠকে বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি হাজির ছিলেন বাংলার নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় ও ভিনরাজ্যের নেতারাও। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকেই রাজ্যের সর্বত্র শুভেন্দুকে ‘ব্যবহার’ করতে বঙ্গ বিজেপি-কে নির্দেশ দিয়েছেন অমিত। দলের এক প্রথমসারির নেতার কথায়, ‘‘শুভেন্দুর জনপ্রিয়তা রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও প্রমাণিত। ফলে এতে আশ্চর্যের কিছু নেই যে, তাঁকে সারা রাজ্যেই ব্যবহার করা হবে। দিলীপ’দার জনপ্রিয়তাও এখন প্রচুর। ফলে দিলীপ-শুভেন্দু জুটি নির্বাচনী ময়দানে নামলে তার ফল মিলতে বাধ্য।’’

রবিবার বাংলা ছাড়ার আগে অন্ডালে অনেক রাত পর্যন্ত রাজ্যনেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অমিত। কাজি নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের সেই বৈঠকে দিলীপ ছাড়াও ছিলেন রাজ্যে বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। অমিতকে বিদায় জানাতে শুভেন্দুরও সেখানে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি শেষপর্যন্ত যাননি। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেও শুভেন্দুকে কী ভাবে ‘ব্যবহার’ করতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন অমিত।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিবেকানন্দের জন্মদিনে ফের বঙ্গসফরে আসতে পারেন অমিত

নির্বাচনের এখনও কয়েক মাস বাকি থাকলেও ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় সভা শুরু করে দিয়েছেন দিলীপ, কৈলাসরা। এ বার সেই প্রচারে ‘ঝড় তুলতে’ শুরু হবে শুভেন্দুর সফর। রাজ্য বিজেপি-র এক নেতা জানান, ‘‘শুভেন্দুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্যতম সৈনিক হিসেবে দেখতে চাইছেন অমিত’জি। ফলে তাঁর অমিতের নির্দেশমতো ডিসেম্বর থেকেই জেলাসফর শুরু করে দিচ্ছেন শুভেন্দু।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ‘রাজনৈতিক কারণে’ বাংলায় কার্যকর না করার অভিযোগকে নির্বাচনী প্রচারে অন্যতম হাতিয়ার করেছে বিজেপি। মনে করা হচ্ছে, মমতা সরকারেরই প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দুর মুখে সেই অভিযোগ ভোটারদের মধ্যে আরও বেশি প্রতিষ্ঠা তৈরি করতে পারবে। যোগদানের দিন মেদিনীপুর কলেজ মাঠ বাদ দিলে পূর্ব বর্ধমানেই শুভেন্দুর বিজেপি-র প্রথম জনসভা। ওই সভা ঘিরে সকাল থেকে‌ই প্রস্তুতি তুঙ্গে। ওই সভাতেও বিভিন্ন দলের অনেকে বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন বলে দাবি বিজেপি রাজ্যনেতৃত্বের। তবে তাতে এখনও পর্যন্ত বড় কোনও নাম নেই বলেই খবর।

আরও পড়ুন: শুভেন্দু দলে যোগ দেওয়ার পরেই নারদের ভিডিয়ো মুছল বিজেপি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন