BJP

BJP: নড্ডার ধমকের পরেও বাংলা ভাগের দাবিতে অনড় বিজেপি বিধায়ক, অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির

বৃহস্পতিবার কলকাতায় নড্ডার বৈঠকে যোগ দিতে এসে বাংলা ভাগের দাবি তোলেন বিষ্ণুপ্রসাদ। অতীতেও এই দাবিতে সরব হয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২২ ১৬:৪১
Share:

বৃহস্পতিবার কলকাতায় নড্ডা। নিজস্ব চিত্র।

বাংলা সফরের শেষ দিনে বৃহস্পতিবারই দলের নীতিগত বিষয় নিয়ে মুখ খোলা যাবে না বলে বিধায়কদের সতর্ক করেছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। কিন্তু শুক্রবার ফের পুরনো দাবিতে সরব হলেন কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। কলকাতায় বিধানসভা চত্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্লোগানের উল্লেখ করে তিনি ‘লোকালের জন্য ভোকাল’ হচ্ছেন বলেও দাবি করেন। নড্ডার সফরের পর পরই বিষ্ণুপ্রসাদের এমন মন্তব্যে ঘোর অস্বস্তি রাজ্য বিজেপিতে। বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না সে প্রশ্ন এড়িয়ে দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অনুন্নয়নের জন্য সাধারণ মানুষের চাপ তো রয়েইছে। সেই চাপের বাধ্যবাধকতা থেকেই ওই দাবি তুলে থাকতে পারেন বিধায়ক।’’

Advertisement

বিষ্ণুপ্রসাদ অতীতেও পাহাড়কে আলাদা রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান। বিধানসভাতেও এ নিয়ে সরব হন। বৃহস্পতিবার কলকাতায় নড্ডার বৈঠকে যোগ দিতে এসেও সেই দাবি তোলায় অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি। পরে নড্ডা জানিয়ে দেন, এই বিষয়ে মুখ খোলা যাবে না। বিধায়কদের জানান, দলের নীতিগত বিষয়ে কথা বলবেন শুধু রাজ্যের শীর্ষ নেতারা। এর পরেও তিনি যে পৃথক রাজ্যের দাবিতে অনড় তা বুঝিয়ে শুক্রবার বিষ্ণুপ্রসাদ বলেন, ‘‘আমি যে জায়গার জনপ্রতিনিধি সেই জায়গাকে ৫৪ সালে বাংলায় ঢোকানো হয়েছিল। আমার এলাকার জনজাতি মানুষেরা স্বাধীনতার পর থেকে বঞ্চনার স্বীকার। আমি তাই ওই এলাকার ভাগ চাই। এখনও চাই এবং চাইতে থাকব।’’

বিজেপি বরাবরই দলের পক্ষে অখণ্ড বাংলার কথা বলে এলেও পাহাড়-সহ উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের দাবিতে সরব। দলের পক্ষে বার বার বলা হয়েছে, বিজেপি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান চায়। সেই প্রসঙ্গে টেনেই বিষ্ণুপ্রসাদ শুক্রবার বলেন, ‘‘স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান মানেই বাংলার থেকে আলাদা হওয়া। মোদীজি স্লোগান তুলেছেন ‘লোকাল ফর ভোকাল’। আমি লোকালের জন্য ভোকাল হচ্ছি।’’

Advertisement

এই প্রসঙ্গে শমীক বলেন, ‘‘দল রাজ্য ভাগের বিরোধী। আমরা মনে করি বর্তমান ভৌগোলিক সীমারেখা অক্ষুণ্ণ রেখেই রেখে আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব। যে ক্ষোভ, হতাশা তৈরি হয়েছে তা রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার জন্য। তৃণমূল বিভিন্ন সময়ে কখনও লেপচা, কখনও ভুটিয়া, গোর্খাদের নিয়ে রাজনীতি করেছে। অশান্তির পরিবেশ তৈরি করেছে। জিটিএ-র মতো অসাংবিধানিক বিষয়কে পাহাড়ের মানুষের উপরে চাপিয়ে দিয়েছে।’’ কিন্তু দলের নীতির বাইরে গিয়ে কথা বলার জন্য বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে কি দল ব্যবস্থা নেবে? শমীক বলেন, ‘‘সেটা দল ভাববে। তবে সাধারণ মানুষের চাপ তো আছেই। সেই চাপের বাধ্যবাধকতা থেকে মানুষ এই ধরনের কথা বলেন।’’

বিজেপি বিধায়কের এই বক্তব্যের পরে তৃণমূলের পক্ষ থেকেও সমালোচনা করা হয়েছে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি একটা সার্কাস পার্টি। এক এক জন এক এক রকম কথা বলেন। নড্ডা বলার পরেও এক জন বিধায়ক বলছেন। বিজেপি ব্যবস্থা নিক। তা না হলে বুঝতে হবে দলের দু’রকম অবস্থান রয়েছে। আসলে স্থানীয় মানুষের এ নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই। পাহাড়ের মানুষ শান্তি চান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার সেই শান্তির পরিবেশ তৈরি করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন