বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। ছবি সংগৃহীত।
দলের একাধিক বৈঠকে তাঁর গরহাজিরা কিছু দিন ধরেই নানা জল্পনা তৈরি করছিল। এ বার বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস সরাসরি তোপ দাগলেন দলেরই কিছু নেতার বিরুদ্ধে। বললেন, ‘‘আগামী দিনে কর্মীরা কেউ আর বিজেপিতে থাকবেন না।’’
শুক্রবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান বনগাঁর ট’বাজার এলাকার বাসিন্দা, বিজেপি কর্মী ঋষভ অধিকারী ও তাঁর মা। তাঁর মৃত্যুতে দলের নেতাদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ। রবিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বিজেপিতে কর্মীরা কেন থাকবেন? যে কর্মী (ঋষভ) দল করতে গিয়ে মারধর খেয়েছিল, মাথায় আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল, তাঁর মৃত্যুতে বিজেপি নেতাদের সময় হল না বাড়িতে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর। শ্মশানযাত্রী হিসেবে দলের কাউকে দেখা যায়নি। তাই আগামী দিনে বিজেপিতে কোনও কর্মী থাকবে না।’’ বিশ্বজিৎ গিয়েছিলেন ঋষভের বাড়িতে। ছিলেন শ্মশানেও।
শনিবার বনগাঁ শহরে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠক করতে এসেছিলেন। বৈঠকে যাননি বিশ্বজিৎ। এ দিন তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বনগাঁয় বৈঠক করতে এলেন, নেতৃত্বের উচিত ছিল তাঁকে ঋষভের মৃত্যুর ঘটনাটি জানিয়ে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া।’’
শনিবারের বৈঠকে দেখা যায়নি বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়াকে। তিনি দলের কিছু কর্মী-সমর্থককে নিয়ে দিঘায় বেড়াতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে বিশ্বজিৎ বলেন ‘‘দলীয় কর্মী মারা গেলেন, আর বিধায়ক দিঘায় আনন্দ করছেন। এটা ভাবা যায় না!’’
বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মনস্পতি দেব বলেন, ‘‘ঋষভ মারা যাওয়ার পরে তাঁর বাড়িতে দু’জন মণ্ডল সভাপতি গিয়েছিলেন। আমি দেরিতে খবর পেয়েছিলাম। বিশ্বজিৎবাবু তো জেলার সহ-সভাপতি। তাঁরও উচিত ছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বিষয়টি জানানোর। আমাদের সঙ্গে আলোচনাও করতে পারতেন।’’ ২০১১ ও ২০১৬ সালে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। গত লোকসভা ভোটের পরে তৃণমূল ছেড়ে যোগ দেন বিজেপিতে।