কাছাকাছি: গঙ্গাজলঘাটিতে সুভাষ সরকার এবং রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
লক্ষ্য, পঞ্চায়েত ভোট। সেই সঙ্গে সংগঠনের হাল ঝালিয়ে নেওয়া। দুই লক্ষ্যের হাতিয়ার জনসংযোগ এবং পথসভা। জেলার ব্লকে ব্লকে জনসংযোগে নেমে পড়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। রবিবার বাঁকুড়ার একাধিক ব্লকে গিয়ে কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচার ও সাধারণ মানুষের সমস্যা শুনলেন বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং দলের রাজ্য নেতা, বাঁকুড়ারই বাসিন্দা সুভাষ সরকার।
বিভিন্ন ব্লকে দু’দিন ধরে এই জনসংযোগ কর্মসূচি চালাবে বিজেপি। এ দিনই বাঁকুড়ায় এসে রূপা যান মেজিয়া, গঙ্গাজলঘাটি, বাঁকুড়া ২ এবং ছাতনা ব্লকে। পথসভা করে কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করার চেষ্টা চালিয়েছেন রূপা, সুভাষবাবুরা। সভামঞ্চেই শুনেছেন এলাকার গরিব মানুষের সমস্যার কথা। সভায় এক দিকে যেমন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা গরিব মানুষের জন্য কেন্দ্রের রান্নার গ্যাসের প্রকল্পের (উজালা) কথা তুলে ধরা হচ্ছে, অন্য দিকে, তেমনই আবার জেলার ঝাঁ চকচকে রাস্তাঘাট বা দু’টাকা কেজি চাল প্রকল্প যে কেন্দ্রের টাকায় চলছে, সে কথা তুলে ধরছেন বিজেপি নেতারা।
গঙ্গাজলঘাটি বাজার ও পুরন্দরপুর হাটতলার সভায় এলাকার মহিলারা রূপাদের কাছে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রান্নার গ্যাস সংযোগ পাননি বলে অভিযোগ করেন। আবার মাটির বাড়ি খড়ের চালায় বাস করলেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তাঁদের বাড়ি দেওয়া হয়নি বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন গঙ্গাজলঘাটির পুষ্প গরাই, পূর্ণিমা বাদ্যকরেরা। রূপা তাঁদের উদ্দেশে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এই রাজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পাঠাচ্ছেন। আর সেই সব প্রকল্প এখানে এসে রং বদলে ফেলছে। আপনারা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে গিয়ে প্রশ্ন তুলুন, কেন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে না।’’
বিজেপি সাংসদের দাবি, “নরেন্দ্র মোদী উন্নয়নের টাকা ভাগ করে পাঠান না। কিন্তু এখানে এসে দল বিশেষে তা ভাগ হয়ে যাচ্ছে।’’ পঞ্চায়েত ভোট সামনে রেখেই যে জেলায় এই কর্মসূচি, তা স্পষ্ট সুভাষবাবুর কথায়। তিনি বলেন, “কেন্দ্রের প্রকল্পগুলিকে রাজ্য সরকার নিজের বলে চালাচ্ছে। ভোটের আগে মানুষের এই ভুল ভাঙানোই আমাদের লক্ষ্য।’’
বিজেপি-র অভিযোগ নস্যাৎ করে তৃণমূল নেতা তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রকল্প রাজ্যে হলে এবং রাজ্যের টাকা সেখানে থাকলে, রাজ্য তো রং বদলাবেই! রাজ্যের টাকা কেন্দ্র কেটে নিয়ে যাবে, আবার তারা নিজেদের প্রকল্প বলে ঢাকও পেটাবে, এ়টা হয় না।’’ একই সঙ্গে রূপার উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘উনি রাজ্যসভার সাংসদ বলে হয়তো এই বিষয়টা বোঝেন না। লোকসভা বা বিধানসভায় লড়ে জিতলে এ সব বুঝতে পারতেন।’’