প্রতীকী ছবি।
রাজ্য বিজেপিকে কার্যত দায়িত্বের বাইরে রেখেই পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করল গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস), বিজেপি, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি), বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-সহ পরিবারের সব সংগঠনের সমন্বয় বৈঠকের নির্যাস থেকে এটা স্পষ্ট।
বিজেপি সূত্রের খবর, কলকাতার মানিকতলায় এ দিন ওই বৈঠকে আরএসএসের এক তরুণ অবাঙালি নেতাকে এ রাজ্যের জন্য লোকসভা ভোটের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁকে বলা হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে কী কী প্রশ্নে আক্রমণ করা উচিত, তার খসড়া তালিকা তৈরি করতে। পরে তা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সঙ্ঘ এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হবে।
দলীয় সূত্রের আরও খবর, লোকসভা ভোট মাথায় রেখে জেলাভিত্তিক স্থানীয় সমস্যা নিয়ে আন্দোলনে নামার পরামর্শও বিজেপিকে দেওয়া হয় ওই বৈঠকে। বলা হয়, কোন এলাকায় কোন স্থানীয় সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করলে বিজেপির জনপ্রিয়তা বাড়বে, সে বিষয়ে সঙ্ঘের সদস্যরা পরামর্শ দেবেন। কারণ, জেলাগুলিতে তাঁরা মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করেন। তাঁদের অভিজ্ঞতার দাম আছে।
ওই বৈঠকে আরএসএস-এর সহ সরকার্যবাহ কৃষ্ণগোপাল, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, আরও দুই কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং রাজ্যের আরও কয়েক জন নেতা ছিলেন।
রাজ্য বিজেপির একাংশের মতে, আরএসএসের এক জনকে লোকসভা ভোটের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ তৈরির দায়িত্ব দেওয়ার অর্থ— এ রাজ্যে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা কার্যত স্বীকার করে নেওয়া। বস্তুত, এনআরসি নিয়ে তৃণমূলের প্রচারের মোকাবিলা রাজ্য বিজেপি কেন করতে পারছে না, সে প্রসঙ্গ তুলে এ দিনের বৈঠকে কিঞ্চিৎ উষ্মাও প্রকাশ করেন সঙ্ঘ নেতৃত্বের একাংশ। এনআরসি-কাণ্ডে বিজেপিকে ‘বাঙালি বিরোধী’ তকমা দিয়ে প্রচারে নেমেছে তৃণমূল এবং বাম। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ অগস্ট কলকাতার মেয়ো রোডের সভায় তার জবাব দিয়েছিলেন। এ দিন সঙ্ঘের বৈঠকে বলা হয়, এনআরসি তৈরি হলে বাঙালি হিন্দুদের যে কোনও বিপদ হবে না, তা ব্লকে ব্লকে গিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে। কেন্দ্র শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে আন্তরিক বলেই ‘নাগরিকত্ব বিল’ তৈরি হয়েছে, বলতে হবে সে কথাও। মতুয়ারা শরণার্থী হওয়া সত্ত্বেও তাদের বিজেপির দিকে টানতে নেতারা ব্যর্থ হচ্ছেন কেন, সে প্রশ্নও ওঠে এ দিনের বৈঠকে।