ভোটের মুখে ছিটমহল নিয়ে আবার আন্দোলনে বিজেপি

ছিটমহলের বাসিন্দাদের প্রতি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে এবং তাঁদের পুনর্বাসনের দাবিতে আগামী ৮ নভেম্বর কলকাতায় বিক্ষোভ-অবস্থান করবে রাজ্য বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫৫
Share:

ছিটমহলের বাসিন্দাদের প্রতি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে এবং তাঁদের পুনর্বাসনের দাবিতে আগামী ৮ নভেম্বর কলকাতায় বিক্ষোভ-অবস্থান করবে রাজ্য বিজেপি। শুধু দলীয় নেতা-কর্মীরাই নন, ওই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন ছিটমহলের ভুক্তভোগী বাসিন্দারাও। কোচবিহার লোকসভায় উপনির্বাচনের আগে বিজেপি-র এই আন্দোলন আসলে ওই কেন্দ্রের ভোটারদের কাছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

বিজেপির অভিযোগ, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ছিটমহল বিনিময়ের পর এ দেশের ছিট-খণ্ডে যাঁরা ঠাঁই নিয়েছেন, তাঁদের জমি-বাড়ি, পানীয় জল, নিকাশি, সড়ক, বিদ্যুৎ সংযোগ-সহ জীবনের কোনও ন্যূনতম প্রয়োজনই মেটানোর ব্যবস্থা করেনি রাজ্য সরকার। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের আরও বক্তব্য, ছিটবাসীদের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৩২০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তার মধ্যে ২০০ কোটি টাকা রাজ্য পেয়েও গিয়েছে। তা হলে কেন ছিটমহলের

বাসিন্দাদের উন্নয়নের কাজে তা খরচ করা হচ্ছে না?

Advertisement

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, রাজ্য সরকার ছিটবাসীদের জমি জরিপের কাজটুকুও করছে না। তাঁরা সরকারের কোনও উন্নয়ন-প্রকল্পের সুযোগও নিতে পারছেন না। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এলাকার ওই ছিটমহলে এমন বহু মানুষ আছেন, যাঁদের রেশন তুলতে বাড়ি থেকে ১০ বা ২০ কিলোমিটার যেতে হয়! এটা কেন হবে? সরকার কি ওঁদের সঙ্গে তামাশা করছে?’’ বিজেপি নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, ছিটমহলের বাসিন্দাদের সিংহভাগ তাঁদের দলে যোগ দেওয়ায় তৃণমূল সরকার প্রতিশোধ নিতে চেয়ে বঞ্চনারা মাত্রা বাড়িয়ে তুলছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, কোচবিহারে বিজেপির অবস্থা কিছুটা ভাল হয়েছে। আসন্ন উপনির্বাচনে তার ফায়দা তুলতেই ছিটমহল-বঞ্চনা নিয়ে এই সময়ে আন্দোলন করে তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে তারা। প্রসঙ্গত, ছিটমহল বিনিময়ের পর বাংলাদেশ থেকে এ দেশে চলে আসা মানুষদের একাংশ সরকারি বঞ্চনায় হতাশ হয়ে ফের বাংলাদেশে ফিরে

যেতেও চেয়েছেন।

কোচবিহারের জেলাশাসক পি উলগানাথন অবশ্য ছিটমহলবাসীদের প্রতি বঞ্চনার সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বরং বলেন, ‘‘ছিটমহলবাসীদের পুনর্বাসন-উন্নয়নের জন্য প্রায় ৩০০ কোটি টাকার মতো কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। হাসপাতাল, রাস্তা তৈরি হচ্ছে। জমি জরিপ করা হচ্ছে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে বিধানসভা ভোট ছিল। এখন সামনে উপনির্বাচন। এই সব নির্বাচনের সময় উন্নয়নের কাজ বন্ধ রাখতে হয়। তাই কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার বলেছিল, ২ বছরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। সুতরাং, হাতে এখনও সময় আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন