শিশু পাচার-কাণ্ডে দলের একাধিক সদস্যের নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে বিজেপি। দিলীপ ঘোষের পরে জুহি চৌধুরী। তবে বিজেপির একাধিক নেতার সন্দেহ, এতে তৃণমূলেরও নিচু তলার বেশ কয়েক জন নেতা জড়িত এবং তাদের আড়াল করতেই ব্যস্ত সিআইডি। তাই পাচার কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলার জমি তৈরি শুরু করে দিল বিজেপি।
বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, শিশু পাচার শুধু পশ্চিমবঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। অন্য রাজ্য, এমনকী অন্য দেশেও এর জাল বিস্তৃত। সিবিআই তদন্ত হলে তবেই অপরাধের মূলে আঘাত করা যাবে। তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনাটা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গে। ফলে তদন্তভার সিআইডি-র হাতেই থাকবে। ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৫৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কোনও ভাবেই ওই তদন্ত সিবিআই নিতে পারে না। প্রয়োজনে বড়জোর তারা সিআইডি-কে সহযোগিতা করতে পারে।’’
বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে শিশু পাচারের বিষয়ে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে। কারণ মন্ত্রকের সন্দেহ, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে দুবাই বা অন্যান্য দেশেও শিশু পাচার চক্র সক্রিয়। ওই সন্দেহ সত্য প্রমাণিত হলে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে চলে যেতে পারে।’’
মন্ত্রকের রিপোর্টের ভিত্তিতেই এখন সিআইডি শিশু পাচার-কাণ্ডের তদন্ত করছে। বিজেপির দাবি, সিবিআই তদন্ত হলে তৃণমূলের অনেক কর্মী-নেতার নাম জড়িয়ে যাবে। সিআইডি যে হেতু রাজ্য সরকারের অধীন, তাই তারা তৃণমূলের যোগ আড়াল করার চেষ্টা করছে। সিবিআই তদন্ত হলে সব অপরাধীই জালে জড়াবে। প্রসঙ্গত, শিশু পাচারে তৃণমূল-যোগ আড়াল করার প্রতিবাদে আগামিকাল, সোমবার রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার দফতরে বিক্ষোভ দেখাবে বিজেপি।
তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, পাচার কাণ্ডে জড়িত বিজেপি নেতাদের বাঁচাতেই সিবিআই তদন্তের কথা বলা হচ্ছে। কারণ, জুহিদের জেরা করে যা জানা যাচ্ছে, তাতে পাচারে বিজেপির কিছু রাঘববোয়ালেরও যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ। কোনও ভাবেই এঁদের বাঁচাতে পারবেন না দিলীপ ঘোষরা।