সংগঠনের জেলা সম্মেলনে যুব মোর্চার সভাপতি অমিতাভ রায়।—নিজস্ব চিত্র।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ রেখে ‘অপারেশন পশ্চিমবঙ্গ’ হাতে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। এই পরিস্থিতিতে জেলায় এসে দলের নেতা-কর্মীদের আরও ভাল ভাবে কাজ করার পরামর্শ দিলেন বিজেপির যুব সংগঠন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি অমিতাভ রায়। পদে থেকে যাঁরা নিস্ক্রিয় থাকছেন, তাঁদের অব্যাহতি নেওয়ারও পরামর্শ দিলেন তিনি। অমিতাভবাবুর কথায়, “নেতা হতে বছরের পর বছর লাগে। পদ পেতে লাগে একদিন। পদ হারাতেও লাগে একদিন। ফাঁকি মারলে আপনিই ফাঁকে পড়বেন। দায়িত্ব পালন না করতে পারলে পদে থাকার অধিকার নেই। অব্যাহতি নিন।”
রবিবার মেদিনীপুর শহরের এক সভাঘরে যুব মোর্চার জেলা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সিংহ, যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শুভজিৎ রায় প্রমুখ। যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি বুঝিয়ে দেন, এখন থেকেই কিছু কর্মী আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে শুরু করেছেন। বিজেপিতে এ সব চলবে না। তাঁর কথায়, “আমাদের দল সিপিএম, তৃণমূলের মতো নয়। এখানে সকলকে রাজনৈতিক ভাবে শিক্ষিত হতে হবে। মানুষ আমাদের আচার-আচরণ, চলন-বলনের উপর নজর রাখছেন।” ফাঁকি না দিয়ে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করারও পরমার্শ দেন অমিতাভবাবু। উদাহরণ হিসেবে নিজের কথা বলেন। তাঁর কথায়, “আমি ওয়ার্ডের সদস্য হিসেবে দলে যোগ দিয়েছিলাম। কখনও ভাবিনি, যুব সংগঠনের রাজ্যের দায়িত্ব পাব। আগামী দিনে আপনিও রাজ্য নেতৃত্বে আসতে পারেন।”
সম্মেলনে প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন অমিতাভবাবু। তিনি বলেন, “২০১১ সালে আমরাও পরিবর্তন চেয়েছিলাম। মানুষ পরিত্রাণ চেয়েছিলেন। সাড়ে তিন বছরে কী হল? উনি (মুখ্যমন্ত্রী) বলছেন, টাকা নেই। অথচ, খেলা-মেলা চলছে। কেন শিল্প আসবে? কোনও পরিকাঠামোই তো নেই। উনি নিজের রিপোর্ট কার্ড নিজেই তৈরি করছেন।” অন্যদের মধ্যে যুব মোর্চার এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির শহর সভাপতি অরূপ দাস, মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী শম্পা পাল, যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য দীপঙ্কর মজুমদার প্রমুখ। সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা পুলিশেরও তীব্র সমালোচনা করেন নেতৃত্ব। শহর বিজেপির সহ-সভাপতি রঞ্জিত সিংহ যেমন বলেন, “এ জেলার পুলিশ সুপার (ভারতী ঘোষ) তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীর মতো আচরণ করেন! মিটিং-মিছিলের অনুমতি চাইতে গেলেও পুলিশ দেয় না।” পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সরব হন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক সোমনাথবাবুও। জেলা সভাপতি তুষারবাবু বলেন, “লাঠি, গুন্ডা দিয়ে বিজেপির আন্দোলনকে রোখা যাবে না।” আগামী ৩০ নভেম্বর কলকাতায় অমিত শাহের সভা রয়েছে। সভায় জেলা থেকে ৫০ হাজার মানুষ যাবেন বলে এ দিন জানান তুষারবাবু।