Parnasree Suicide Case

অটিজ়মে আক্রান্ত কন্যাকে নিয়ে গলায় দড়ি বাবার! পর্ণশ্রীতে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ, কারণ খুঁজছে পুলিশ

জন্মের পর থেকেই অটিজ়মে আক্রান্ত সৃজা। তাঁর ভবিষ্যতের কথা ভেবে অবসাদে ভুগছিলেন বাবা সজন দাস। শুক্রবার পর্ণশ্রীর বাড়ি থেকে তাঁদের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৫ ০৯:৫১
Share:

পর্ণশ্রীতে বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বাবা এবং মেয়ের ঝুলন্ত দেহ। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

অটিজ়মে আক্রান্ত ২২ বছরের কন্যাকে নিয়ে আত্মঘাতী হলেন বাবা। বেহালার পর্ণশ্রীর একটি বাড়ি থেকে তাঁদের দু’জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, কন্যার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি অবসাদে ভুগছিলেন। চিকিৎসার খরচ জোগাতেও হিমশিম খাচ্ছিলেন। তবে একসঙ্গে এই দুই মৃত্যুর কারণ কী, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। পর্ণশ্রীর এই ঘটনায় ট্যাংরাকাণ্ডের ছায়া দেখছেন কেউ কেউ।

Advertisement

মৃতেরা হলেন সজন দাস (৫৩) এবং তাঁর কন্যা সৃজা দাস (২২)। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামেশ্বরপুরের বাসিন্দা তাঁরা। পর্ণশ্রীর হো চি মিন সরণিতে একটি দোকান ছিল সজনের। তিনি রান্নাঘরের চিমনি, জলের ফিল্টার ইত্যাদি মেরামত এবং বিক্রি করতেন। বাড়ির একতলায় অফিসটি ছিল। সেখান থেকেই দু’জনের দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ থানায় ফোন করে দু’জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। পুলিশ পৌঁছে দু’টি দেহ উদ্ধার করে। সজনের স্ত্রী জলি দাস বাড়িতে ছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, একতলার ঘরে পাখার হুক থেকে নাইলনের দড়ির সঙ্গে ঝুলছিলেন বাবা এবং মেয়ে। সৃজা জন্ম থেকেই অটিজ়মে আক্রান্ত ছিলেন। সারা বছর তাঁকে ওষুধ খেতে হত। কন্যার ভবিষ্যতের কথা ভেবে চিন্তায় ছিলেন সজন। চিকিৎসার খরচও দিন দিন বাড়ছিল। সজনের স্ত্রী এবং প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সজন। গিয়েছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। ১টা ১৫ মিনিট নাগাদ তিনি স্ত্রীকে ফোনে জানান, তাঁরা হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছেন। কয়েক ঘণ্টা পরে স্ত্রী ফোন করলে আর ধরেননি। সন্ধ্যার পর চিন্তিত হয়ে পড়েন সজনের স্ত্রী। তিনি রঞ্জিতকুমার সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে ফোন করে বিষয়টি জানান। রঞ্জিত পর্ণশ্রীতে এসে একতলার ঘরের দরজা দিয়ে উঁকি মেরে দু’জনের দেহ ঝুলতে দেখেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। ওই ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা ছিল না।

Advertisement

রাত ১২টার পর পর্ণশ্রীর বাড়ি থেকে বার করা হয় বাবা এবং মেয়ের দেহ। দড়ি কেটে দেহগুলি নামিয়ে এনেছিল পুলিশ। সেগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কী কারণে দু’জনের মৃত্যু হল, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে ওই রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন তদন্তকারীরা। আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে ট্যাংরায় বাড়ি থেকে একই পরিবারের তিন জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই পরিবারের বাকি তিন সদস্য বাইপাসের ধারে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। জানা যায়, আর্থিক সমস্যার কারণে তাঁরা সকলে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও সেই দাবির সত্যতা যাচাই করে দেখছে পুলিশ। পর্ণশ্রীর ঘটনার নেপথ্যেও আর্থিক সমস্যা রয়েছে কি না, পুলিশ খতিয়ে দেখছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement