—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নিউ টাউনের যাত্রাগাছি এলাকা থেকে উদ্ধার দত্তাবাদের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দেহ! পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে অপহরণ করে খুনের পরে দেহ ফেলে দেওয়া হয়। গত ২৮ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরের দিন তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে রাজগঞ্জের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও)-এর।
মৃত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নাম স্বপন কামিলা। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের নীলদা পোস্টঅফিস এলাকার দিলমাটিয়া গ্রামে। তবে থাকতেন দত্তাবাদে। পরিবারের অভিযোগ, ২৮ অক্টোবর দত্তাবাদের সোনার দোকান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় স্বপনকে। শুধু তাঁকে একা নয়, ওই দোকানের মালিককেও নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে ছেড়ে দিলেও খোঁজ মেলেনি স্বপনের। পরে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে গিয়ে পরিবারের লোকেরা জানতে পারেন, যাত্রাগাছি বাগজোলা খালপাড়ের ঝোপের মধ্যে থেকে এক ব্যক্তির দেহ মিলেছে। স্বপনের ছবি দেখে সেই দেহ শনাক্ত করা হয়।
থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মৃত্যুর নেপথ্যে কী কারণ, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা। তবে পরিবারের দাবি, প্রশান্ত বর্ধন নামে এক বিডিও স্বপনকে অপহরণ করেন। পরে স্বপনকে খুন করে দেহ খালের ধারে ফেলে দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রে পরিবারের দাবি, স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ২৮ অক্টোবর স্বপনের দোকানের সামনে দু’টি গাড়ি আসে। একটি সাদা, অন্যটি কালো। একটি গাড়ির মাথায় নীলবাতিও লাগানো ছিল। ওই গাড়ি থেকে নেমে এক ব্যক্তি নিজেকে প্রশান্ত বর্ধন বলে পরিচয় দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েক জন। তাঁরাই স্বপন এবং তাঁর দোকানের মালিক গোবিন্দ বাগকে তুলে নিয়ে যান। প্রশান্ত নিজেকে বিডিও বলে পরিচয়ও দেন।
কেন অপহরণ? পরিবারের অভিযোগ, অপহরণের দিন কয়েক আগে প্রশান্তের বাড়িতে নাকি চুরির ঘটনা ঘটে। মৃতের স্ত্রী জানিয়েছেন, ওই চুরির ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নিতে কয়েক দিন আগে প্রশান্ত এসেছিলেন তাঁর স্বামীর সোনার দোকানে। তিনি দাবি করেন, তাঁর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া সোনার অলঙ্কার না কি ওই দোকানে বিক্রি করা হয়েছে। সেই নিয়ে খোঁজখবর নিতে এসেছেন। মৃতের ভাই রতন কামিলার অভিযোগ, তাঁর দাদাকে খুন করা হয়েছে। অভিযোগের তির সরাসরি ওই বিডিওর দিকেই। তাঁর কথায়, ‘‘১০-১৫ বছর ধরে দত্তাবাদে দোকান ভাড়া করে সোনা-রূপার ব্যবসা করতেন স্বপন। গণেশ পুজোর সময় উনি বাড়িতে এসেছিলেন। তার পরে শ্বশুরের অসুস্থতার খবর পেয়ে ওড়িশায় যান। তখন আমাদের গ্রামে দু’টি গাড়ি করে কয়েক জন আসেন। তাঁরা এসে স্বপনের খোঁজখবর করেন।’’ পরিবারের দাবি, দত্তাবাদের দোকান থেকে সোনার জিনিস এবং সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে যান প্রশান্তরা। যদিও ওই বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।