সিইও দফতরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
রাজ্য জুড়ে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করার কাজ শুরু করেছেন কমিশনের বুথ স্তরের আধিকারিকেরা (বিএলও)। আর সেই দিনই একগুচ্ছ অভিযোগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে (সিইও অফিস) গেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অভিযোগ, এনুমারেশন ফর্মের সঙ্গে জমা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হচ্ছে জন্মের ভুয়ো শংসাপত্র। মৃত ভোটারের নাম ব্যবহার করে এই শংসাপত্র তৈরি করছে তৃণমূল, অভিযোগ শুভেন্দুর।
মঙ্গলবার শুভেন্দুর সঙ্গে সিইও দফতরে গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি সঞ্জয় সিংহ এবং সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য বিজেপির তিন প্রতিনিধির দল দেখা করে রাজ্যের সিইও মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে। তাঁর কাছে জন্মশংসাপত্র সংক্রান্ত অভিযোগ জমা করেন। কমিশন সূত্রে খবর, শুভেন্দুদের জানানো হয়েছে এনুমারেশন ফর্মের সঙ্গে জমা পড়া সব নথিই খতিয়ে দেখা হবে।
শুভেন্দুর অভিযোগ, এসআইআরের ফর্মের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি জাল করার কাজ শুরু হয়েছে। বিরোধী দলনেতার দাবি, ‘আইপ্যাক’-ই এই সব নথি তৈরি করে দিচ্ছে। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল নথি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। সেই বিষয়টিই সিইও-কে জানিয়ে এসেছেন বলে দাবি শুভেন্দুর। সঙ্গে ‘ভুয়ো জন্মের শংসাপত্র’-এর নথিও জমা দিয়েছেন। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, মৃত ভোটারদের নামে জন্মশংসাপত্র তৈরি করা হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, এই সংক্রান্ত জালিয়াতি বেশি হচ্ছে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কোচবিহারে!
শুভেন্দুর দাবি, রাজ্যের সব বিএলও-দের তালিকা কমিশনের ওয়েবসাইটে দিতে হবে। সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলিকেও সেই তালিকা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। শুধু বিএলও-দের নাম নয়, সঙ্গে তিনি কোন পদে চাকরি করছেন তা-ও উল্লেখ করতে হবে বলে জানান শুভেন্দু। তাঁর অভিযোগ, অঙ্গনওয়ারি কর্মীদের বিএলও হিসাবে নিযুক্ত করেছেন বিডিও। বিহারের প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু বলেন, ‘‘ওখানে অনেক বিএলও-র নামেই অভিযোগ উঠেছিল। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ জেল খাটছেন। বিএলও-রা ভুল করলে তাঁর ফল ভুগতে হবে।’’ বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের ক্যাডারেরা এসআইআর প্রক্রিয়ার উপর নজরদারি চালাচ্ছে। কমিশনের কাছে তাদের দাবি, যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে। শুভেন্দুর দাবি, এ ব্যাপারে সিইও আশ্বস্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, ভোটার তালিকায় নাম রাখতে অনেকেই নিজেদের জন্মের শংসাপত্রকে প্রমাণপত্র হিসাবে কমিশনকে দিতে চান। সেই কারণে অনেকেই তাঁদের জন্মশংসাপত্র বার করার চেষ্টা করছেন। শুভেন্দুর অভিযোগ, সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে তৃণমূল।