হোটেলের সামনে দেহ উদ্ধার জলপাইগুড়িতে

হোটেলের ঘর থেকে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে জলপাইগুড়িতে। শনিবার সকালে শহরের ক্লাব রোডের একটি হোটেলের সামনে থেকে ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শম্ভু সূত্রধর (৫২)। হোটেলের দোতলার একটি ঘরে ছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ ২১:২১
Share:

হোটেলের ঘর থেকে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে জলপাইগুড়িতে। শনিবার সকালে শহরের ক্লাব রোডের একটি হোটেলের সামনে থেকে ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শম্ভু সূত্রধর (৫২)। হোটেলের দোতলার একটি ঘরে ছিলেন তিনি। সেই ঘরের জানলা থেকে পড়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে। তবে তাঁকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে নাকি নিজে ঝাঁপ দিয়েছেন তা নিয়ে পুলিশের মধ্যে ধন্দ রয়েছে। রহস্য বেড়েছে তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের বয়ানেও।

Advertisement

শম্ভুবাবু এর আগেও একাধিকবার সন্ধ্যায় ওই হোটেলে গিয়েছিলেন বলে তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন। শম্ভুবাবুর পরিচিতদের একাংশের অভিযোগ, হোটেলের ঘরে তাস ও জুয়ার আসর বসত। সেখানে যাতায়াত ছিল শম্ভুবাবুর তিনি যে ঘরে ছিলেন সেখান থেকে একটি ফাঁকা মদের বোতল এবং খাবার পাওয়া গিয়েছে। শম্ভুবাবুর ব্যাগ থেকে প্রায় বারো হাজার টাকাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘরটি অবশ্য ভিতর থেকে বন্ধ ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জলপাইগুড়ির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার পুনীত যাদব বলেন, ‘‘সব কিছুই নজরে রাখা হচ্ছে। ওই হোটেলে তিনি আগেও গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। কাদের সঙ্গে তিনি হোটেলে যেতেন তাতেই জানা যাবে। জুয়ার বিষয়টি নিয়ে এখনই বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না।’’

Advertisement

জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি শহরের অরবিন্দনগরে শম্ভুবাবুর বাড়ি। মাসখানেক আগেই তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়েছে। এক ছেলে কলেজে পড়েন। তিনি ধূপগুড়ির একটি হিমঘরে কাজ করতেন। সপ্তাহে কয়েকদিন তিনি কাজের শেষে বাড়ি ফিরে আসতেন। তবে গত শুক্রবার জলপাইগুড়িতে ফিরেও কেন তিনি হোটেলে থেকে গেলেন তা শম্ভুবাবুর পরিবারের কেউ জানেন না বলে দাবি করেছেন। এমনকী স্ত্রী পদ্মাদেবীর সঙ্গে ফোনে কথা হলেও, তিনি জলপাইগুড়ি ফিরে এসেছেন বলে জানাননি। ক্লাবরোডে হোটেলের পাশেই এক আত্মীয়ের বাড়ি রয়েছে। সেখানে না গিয়ে হোটেলে কেন রাতে থাকতে গেলেন তা নিয়েও সংশয়ে পরিবারের সদস্যরা। এ দিকে, পুলিশের দাবি, হোটেলের কর্মীদের জেরা করে জানা গিয়েছে, এর আগেও একাধিকবার শম্ভবুবাবু ওই হোটেলে সন্ধ্যার পরে এসেছিলেন।

শম্ভুবাবুর ব্যাগ থেকে প্রায় ১২ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। আত্মহত্যা করবেন বলে মনস্থির করলে তিনি কেন এত টাকা সঙ্গে নিয়ে হোটেলের ঘরে উঠবেন সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। তবে কি তাসের আসরের জন্যই সঙ্গে এত টাকা এনেছিলেন তিনি? স্পষ্ট নয় তাও।

এইসমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে পুলিশ আপাতত শম্ভুবাবুর ‘সঙ্গী’দের খুঁজছে। পুলিশের একাংশের দাবি, হোটেলের ঘরে জুয়ার আসর বসত। সেই আসরের টানেই ধূপগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ির হোটেলে চলে আসতেন শম্ভুবাবু সহ কয়েকজন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, অনেক রাত পর্যন্ত ওই হোটেলের সামনে দামি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কারা ওই সব গাড়ি নিয়ে নিয়মিত হোটেলে যাতায়াত করেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হোটেলের কর্ণধার প্রদীপ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি বাইরে রয়েছি। কিছু বলতে পারব না।’’ হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফে একজন ম্যানেজারের দাবি, জুয়ার আসর বসার অভিযোগ মিথ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন