—ফাইল চিত্র।
আলিমুদ্দিনের সাফ নির্দেশে, ‘পাঁচ দফা কাজ’ সূত্র মেনে দলের কলেবর ছেঁটে ফেলতে হবে। যাঁরা ওই পাঁচ দফা কাজে নেই, তাঁদের দলেও জায়গা নেই। সংগঠনে এই সংস্কার কর্মসূচির সময়েই সিপিএমে গোলমাল বাড়ছে নতুন এরিয়া কমিটি গঠনকে ঘিরে।
দীর্ঘ দিনের সাংগঠনিক রীতি ভেঙে লোকাল কমিটি তুলে দিচ্ছে সিপিএম। উঠে যাচ্ছে জোনাল কমিটিও। দুই কমিটি মিশে তৈরি হচ্ছে এরিয়া কমিটি। কিন্তু নতুন এই কমিটিতে পদ দখলের জন্য ঝাঁপাচ্ছেন এমন বেশ কিছু নেতা, এলাকার মানুষের কাছে যাঁদের ভাবমূর্তি আদৌ সুবিধার নয়। দলের বড় অংশও একের পর এক নির্বাচনে মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার জন্য ওই স্থানীয় নেতাদেরই দায়ী করেন। তবু তাঁরা নাছো়ড়! বিতর্কের জেরে বেশ কিছু জায়গায় স্থগিত রাখতে হচ্ছে কমিটি গঠনের কাজ। মূলত শহরাঞ্চলেই এই সমস্যা সামলাতে জেরবার সিপিএম।
আসন্ন সম্মেলনের নির্ঘণ্ট ঠিক করতে কাল, মঙ্গলবার আলিমুদ্দিনে বসছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক। সামনে সম্মেলন বলেই এখন এরিয়া সাংগঠনিক কমিটি তৈরি হচ্ছে। সম্মেলন থেকে যা নির্বাচিত কমিটি হবে। দলেরই একাংশের আশঙ্কা, এরিয়া কমিটি গড়তে গিয়ে যে রকম বিতর্ক দেখা দিচ্ছে, সম্মেলনের মঞ্চে তা থেকে না ধুন্ধুমার বাধে! ভোটে হেরে হেরে তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়া দলের পক্ষে সেটা আরও খারাপ বিজ্ঞাপন হবে! আপাতত জেলায় জেলায় গিয়ে সাধারণ সভা করে নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দিচ্ছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তীরা।
খাস কলকাতাতেই উত্তরে বেলগাছিয়া বা দক্ষিণে যাদবপুরে এরিয়া সাংগঠনিক কমিটি তৈরি পণ্ড হয়েছিল বিতর্কিত নেতাদের অন্তর্ভুক্তিকে ঘিরে। অথচ দলের কাজ করতে ইচ্ছুক বহু নেতা-কর্মী জোনাল কমিটি উঠে যাওয়ার পরে শাখা কমিটিতে থাকতে রাজি হয়ে গিয়েছেন। জোনাল থেকে এসে কেউ কেউ শাখার সম্পাদক হয়েছেন। দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘এখনও একটা অংশ আছেন, যাঁরা ভাবছেন লোকাল কমিটিতে পদ না থাকলে এলাকায় গুরুত্ব কমে যাবে! সরতে যাঁরা রাজি নন, তাঁদের নিয়েই সমস্যা।’’
শহুরে এলাকায় দলকে ভাঙিয়ে অস্বচ্ছ কাজকর্মের সুযোগ বেশি। তাই শহরাঞ্চলে কমিটি ঘিরে কাজিয়াও বেশি। দলের এক রাজ্য নেতা বলছেন, ‘‘বিভিন্ন জেলার গ্রামাঞ্চলে নতুন কমিটির কাজ কিন্তু ভাল ভাবেই হয়েছে। কলকাতা, দুই ২৪ পরগনায় সমস্যা বেশি।’’ রাজ্য কমিটি নিদান দিয়েছে, যে এলাকায় দেড়শো দলীয় সদস্য, সেখানে ১৩ জনের এরিয়া সাংগঠনিক কমিটি হবে। যেখানে ৪৫০ সদস্য, সেখানে সর্বাধিক ১৭ জনের কমিটি। আর সদস্য ৪৫০-এর বেশি হলে দু’টো কমিটি। স্বল্প সংখ্যায় কমিটি আঁটিয়ে দেওয়ার কাজই আরও জটিল করে দিচ্ছেন মরিয়া ‘দাদা’রা!