যুব কংগ্রেস সভাপতিকে অকথ্য পুলিশি নির্যাতন, গর্জে উঠলেন সূর্যকান্ত

প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি তথা শান্তিপুর কেন্দ্রের জোট প্রার্থীর উপর পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে সারা রাত অরিন্দমের উপর পুলিশ নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৬ ১২:২৭
Share:

গুরুতর জখম প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি তথা শান্তিপুর কেন্দ্রের জোট প্রার্থীর উপর পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে সারা রাত অরিন্দমের উপর পুলিশ নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ। ভোরে গ্রেফতারি দেখানো হয় কাগজপত্রে। তার পর ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয় অরিন্দমকে। কংগ্রেস নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।

Advertisement

নৌকাডুবির খবর পেয়ে মাঝরাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন অরিন্দম। উদ্ধারকাজ নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের লোকজন অরিন্দমের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তৃণমূল নেতাদের নির্দেশেই পুলিশ প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতিকে থানায় তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। তার পর শুরু হয় অকথ্য নির্যাতন।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র নিজের টুইটার হ্যান্ডলে জখম অরিন্দমের ছবি পোস্ট করেন। সঙ্গে লেখেন, ‘অগ্রাধিকার কোনটা? উদ্ধারকাজ নাকি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করা? তৃণমূলকে এর উত্তর দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ করতে হবে।’’ ভোট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে এক প্রার্থীর সঙ্গে কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, সেই প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস।

Advertisement

বর্ধমান জেলা পুলিশের যদিও দাবি, ঘটনাস্থলে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছিলেন অরিন্দমবাবু। তাই তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। অরিন্দমবাবু কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করান।

আরও পড়ুন:

‘আক্রান্ত’ সিপিএম কর্মী, হাজতও হল তাঁরই

শনিবার রাত ১১টা নাগাদ কালনা খেয়াঘাটের কাছে যাত্রী বোঝাই নৌকা ডুবে যায়। তাতে নদিয়ার শান্তিপুরের অনেকে ছিলেন। অরিন্দমবাবু জানান, রাতে খবর পাওয়ার পরেই দলের নেতা সৌমেন মাহাতোকে নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নিজের পরিচয় দিয়ে নিখোঁজদের সম্পর্কে জানতে চাই। তাতে হয়তো পুলিশকর্মীরা অপমানিত বোধ করেন। এক জন আমার মুখে ঘুষি মারেন। ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। আশপাশে ঘোরাফেরা করা তৃণমূলের লোকজনও চড়াও হয়।’’ তিনি জানান, ভোরে তাঁকে কালনা থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। রবিবার সকালে সিপিএম এবং কংগ্রেসের লোকজন পৌঁছনোর পরে ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া পান তিনি।

এ দিন রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদীকে অভিযোগ জানিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ভোট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে পুলিশ এখন কমিশনের অধীনে। তা-ও এক জন প্রার্থীর সঙ্গে কী ভাবে এমন ঘটল? প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘এত বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। এক প্রার্থী সেখানে উদ্ধারকাজের দাবি জানাতে যাওয়ায় তাঁর উপরে যে বর্বরোচিত অত্যাচার হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা যেন না হয়, তা-ও দেখার দাবি জানিয়েছে জৈদীর কাছে।’’ ঘটনার নিন্দা করেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানস ভুঁইয়াও।

পুলিশ যদিও মারধরের কথা মানতে চায়নি। তাদের দাবি, অরিন্দমবাবু জনতাকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন। তাই তাঁকে সতর্কতামূলক গ্রেফতার (প্রিভেন্টিভ অ্যারেস্ট) করা হয়। বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘এত লোকের মাঝে কী ঘটেছে জানা নেই। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।’’ তৃণমূলের বর্ধমান জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথের বক্তব্য, ‘‘ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আমাদের কেউ কাউকে মারধর করেছে, এ কথা কারও কাছে শুনিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন