খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার অভিযুক্ত, বর্ধমানের বোরহান শেখ।—ফাইল চিত্র।
ধরা পড়ে জেলে। তার পরেও সে ‘ফেরার’!
আড়াই মাস আগে তাকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। তার পর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসারেরা তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এখন সে কলকাতার একটি জেলে বন্দি। মামলার আরও ২৫ অভিযুক্তের সঙ্গে কলকাতার একটি আদালতে সে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছে। তার বিরুদ্ধে চার্জও গঠন করেছে আদালত। তবু ধরা পড়ার ৭৫ দিন পরেও ‘ফেরার’ তকমা ঘুচছে না খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার অভিযুক্ত, বর্ধমানের বোরহান শেখের।
এনআইএ-র ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় সোমবারও রয়েছে তার নাম ও ছবি। বলা আছে, ‘বোরহানকে গ্রেফতারে সহায়ক তথ্য দিতে পারলে ৩ লক্ষ টাকা ইনাম মিলবে’।
বোরহানকে ১৪ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা পরের দিন তাকে হেফাজতে পেয়েছিল কলকাতার এনআইএ আদালতের নির্দেশেই। ওই আদালতে এখন খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার বিচার চলছে। গত ২১ নভেম্বর সেখানে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ হবে ২০১৮-র ১০ থেকে ১৬ জানুয়ারির মধ্যে কোনও দিনে। তবু বোরহান শেখ এনআইএ-র ওয়েবসাইট অনুযায়ী এখনও ফেরার। কেন?
এই ব্যাপারে এনআইএ-র কর্তারা মুখে কার্যত কুলুপ এঁটেছেন। খাগড়াগড় মামলার তদন্তকারী অফিসারকে এসএমএস করেও জবাব মেলেনি। তবে অন্য একটি গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এটা গাফিলতি। কোনও অভিযুক্ত ধরা পড়ার পরেই তার নাম ও ছবি ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’-এর তালিকা থেকে মুছে দেওয়া হয়। ‘ভুলবশত’ বোরহানের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি।
গোয়েন্দাদের একাংশ কিন্তু মানছেন, এই তুচ্ছ ভুল বড়সড় বিভ্রান্তির জন্ম দিতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে, তবে কি ধরা পড়া বোরহান শেখ মোস্ট ওয়ান্টেড বোরহান শেখ নয়? তা ছাড়া, ছবি সম্বলিত এই তালিকা সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে। তাঁরাও বিভ্রান্তিতে পড়বেন। শুধু জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ দমনের জন্য তৈরি এনআইএ-র এমন ভুল হবে কেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
বাংলাদেশে ধরা পড়া হাতকাটা নাসিরুল্লা ওরফে সোহেল মেহফুজ-ও ফেরার তালিকায়। তবে সে ক্ষেত্রে এনআইএ-র যুক্তি, পড়শি দেশে নাসিরুল্লার গ্রেফতারির খবর সরকারি ভাবে এনআইএ আদালতে এখনও জানানো হয়নি।