হাসপাতালে প্রশান্ত। নিজস্ব চিত্র
জঙ্গলের মধ্যে পড়ে কাতরাচ্ছেন ২০ বছরের এক তরুণ। কোমরের নীচ থেকে অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে তাঁর। আর উপরের অংশে মারধরের দাগ।
শুক্রবার গোদাপিয়াশালের অদূরে হরিণার জঙ্গলের মধ্যে থেকে জখম ও দগ্ধ অবস্থায় ওই তরুণকে উদ্ধার করেন স্থানীয়েরাই। প্রশান্ত ঘোড়া নামে ওই তরুণের বাড়ি আনন্দপুরেই কোতাইয়ে। প্রথমে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
সূত্রে খবর, এ দিন সকালে পেট্রোল নিয়ে মোটরবাইকে চেপে গোদাপিয়াশাল-আনন্দপুর জঙ্গল পথ দিয়ে ফিরছিলেন প্রশান্ত। তখনই ওই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, প্রশান্ত তাঁদের জানিয়েছেন, ফেরার সময় দু’জন তাঁর পথ আটকায়। তারপর মারধর করে তাঁরই কেনা ডিজেল গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রশান্তর কাছে যে হাজার ছয়েক টাকা ছিল তাও কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। প্রশান্তর দাদা মাধাই ঘোড়া বলেন, “কারও হয়তো ভাইয়ের উপর রাগ রয়েছে। না হলে এমন ঘটনা ঘটাবে কেন?” তবে প্রশান্ত হামলাকারীদের চিনতে পারেননি বলেই মাধাইয়ের দাবি।
হামলা নেহাতই টাকা ছিনতাইয়ের জন্য কিনা, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। ৬ হাজার টাকার জন্য দুষ্কৃতীরা এ ভাবে একজনকে মারধর করে কেন পুড়িয়ে দেবে তা পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। তা ছাড়া, ঘটনাস্থল থেকে প্রশান্তের মোটরবাইক ও মোবাইল পাওয়া গিয়েছে। যা থেকে অনুমান দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তরুণের তেমন ধস্তাধস্তি হয়নি।
তাই প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের একাংশের ধারণা, ওই তরুণ নিজেও গায়ে আগুন লাগিয়ে থাকতে পারেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বছর তিনেক আগে প্রশান্ত ঠিকাকর্মীর কাজ করতেন। অন্যত্র থাকতেন। পরে বাড়ি ফিরে ট্রাক্টর চালানোর কাজ শুরু করে। মানসিক অবসাদে ভোগায় সেই সময় তাঁর চিকিত্সাও শুরু হয়েছিল। তবে প্রশান্ত নিজের গায়ে আগুন লাগাতে পারেন বলে মানতে নারাজ তাঁর দাদা মাধাই। তিনি বলেন, “ভাই এমন কাজ করতে পারে না। দুষ্কৃতীরাই ওর গায়ে আগুন দিয়েছে।”
এই অবস্থায় প্রশান্তর সঙ্গে কথা বলা জরুরি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “একটু সুস্থ হলেই ওই তরুণের সঙ্গে কথা বলা হবে। ঘটনাটি ঠিক কী তা জানার চেষ্টা হবে।”