—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কেন্দ্রীয় পূর্ত ও সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক গাড়ির সার্টিফিকেট অফ ফিটনেস (সিএফ) প্রদানের ক্ষেত্রে ফি উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছরের ১১ নভেম্বর এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র। নতুন নিয়মে সব ধরনের যানবাহনের ক্ষেত্রেই ফিটনেস সার্টিফিকেট নবীকরণের খরচ বেড়েছে, যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে চলেছে পুরোনো ও বাণিজ্যিক যানবাহনের উপর। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করে চিঠি দিয়েছে বাস মালিকদের সংগঠন অল বেঙ্গল বাস ও মিনিবাস সমন্বয় সমিতি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, এই হঠাৎ ফি বৃদ্ধি রাজ্যের বাস ও মিনিবাস পরিষেবার উপর মারাত্মক চাপ তৈরি করবে। একই দাবিতে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং পরিবহণসচিব সৌমিত্র মোহনকেও পৃথক ভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যানবাহনের বয়সের ভিত্তিতে ফিটনেস পরীক্ষার ফি নির্ধারণে নতুন কাঠামো চালু করা হয়েছে। এবার যানবাহনকে তিনটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে—১০ থেকে ১৫ বছর, ১৫ থেকে ২০ বছর এবং ২০ বছরের বেশি। বিশেষ করে বাণিজ্যিক যানবাহনের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরও বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে ১৫ বছর বয়সের পর থেকে উচ্চ ফি কার্যকর হত, এখন তা কমিয়ে ১০ বছর করা হয়েছে।
নতুন নিয়মে ব্যক্তিগত হালকা মোটরযান, অর্থাৎ ২০ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ির ফিটনেস নবীকরণ ফি ১০,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫,০০০ টাকা করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে বাণিজ্যিক যানবাহনের ক্ষেত্রে। ২০ বছরের বেশি পুরোনো ভারী ট্রাক ও বাসের ফি ৩,৫০০ টাকা থেকে এক লাফে ২৫,০০০ টাকা করা হয়েছে। মাঝারি বাণিজ্যিক যানবাহনের ক্ষেত্রে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০,০০০ টাকা এবং হালকা বাণিজ্যিক যানবাহনের ক্ষেত্রে ১৫,০০০ টাকা। দুই চাকার যানবাহনের ক্ষেত্রেও ফি ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২,০০০ টাকা করা হয়েছে।
কেন্দ্রের দাবি, এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হল পুরোনো, দূষণকারী ও অনিরাপদ যানবাহন ধীরে ধীরে রাস্তায় কমানো এবং স্ক্র্যাপ নীতিকে উৎসাহ দেওয়া। তবে বাস মালিক সংগঠনগুলির মতে, এই ফি বৃদ্ধি কার্যত পুরোনো বাস চালানোকে অসম্ভব করে তুলবে, যার প্রভাব পড়বে গণপরিবহণ ব্যবস্থার উপর এবং শেষ পর্যন্ত ভোগান্তিতে পড়বেন সাধারণ যাত্রীরাই। বাস সংগঠনের নেতা রাহুল বলেন, ‘‘করোনাকালীন লকডাউনের জেরে পরিবহণ শিল্পের কোমর ভেঙে গিয়েছে। এখনও বেসরকারি পরিবহণ সারা দেশেই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। সেই সময় এমন সিএফের ফি বৃদ্ধি সিদ্ধান্ত মরার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতোই বলে মনে হচ্ছে। তাই আমরা এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছি।’’